ঠাণ্ডার আমেজ। প্রতীকী ছবি।
সকালে রান্নাঘরে ঢোকার আগে স্নান সেরে নেন দুবরাজপুরের বধূ রিঙ্কু দত্ত। রুটিনে পরিবর্তন হয়নি শুক্রবারও। কিন্তু স্নানঘরে ঢুকে হাতের তালুতে নারকেল তেল ঢালতে গিয়েই অবাক তিনি। ঠান্ডায় জমেছে নারকেল তেল!
শুক্রবার সকালে এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে জেলার অনেকেরই। বেশিরভাগ মনেই করতে পারেননি, অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে কত বছর আগে নারকেল তেল জমতে দেখেছেন। হেমন্তের ভোরে ঠান্ডা হাওয়া, দুপুরে মিষ্টি রোদ আর সন্ধ্যা থেকেই কুয়াশার আবেশ গ্রামগঞ্জে ব্যতিক্রমী নয়। তাই বলে নারকেল তেল জমানোর মতো ঠান্ডা!
হেমন্তের চেনা আবহাওয়া নয়, দু’দিন ধরে একটানা বৃষ্টি সেটাই করে দেখাল রাঢ়বঙ্গে।
বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের জেরে আগামী ৪৮ ঘণ্টা মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি চলবে রাজ্য জুড়ে— এমনই জানিয়েছিল আবহাওয়া দফতর। আলিপুর আবহাওয়া দফতর বলেছিল, বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদে অতি ভারী বৃষ্টি হবে। পূর্বাভাস সত্যি করে বুধবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় বৃষ্টি। তার পর থেকে কখনও ঝিরঝিরে কখনও মুষলধারে বৃষ্টি বৃহস্পতিবার তো চলেছেই, শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তা থামেনি। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, গত দু’দিনে জেলায় বৃষ্টিপাতের গড় ১০০ মিলিমিটার ছাড়িয়েছে। সিউড়ি মহকুমায় বৃষ্টি হয়েছে প্রায় ১৫০ মিলিমিটার। তার জেরেই এক ধাক্কায় তাপমাত্রা কমেছে কম করে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে ১৯.২ ডিগ্রিতে।
নারকেল তেলের রূপবদলের কারণ সেটাই।
শান্তিনিকেতন হাওয়া অফিস জানিয়েছে, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার মধ্যে তফাতও বেশি নয়। সে জন্য শীতের আমেজ অনুভূত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে একটানা বৃষ্টির জেরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৩ ডিগ্রিতে। শুক্রবার তা আরও কমে হয়েছে ২১ ডিগ্রি। ঘরে পাখা বন্ধ করেছেন জেলাবাসী। তবে বৃষ্টি কমবে শনিবার থেকেই, এমনই বলছে হাওয়া অফিস।
কিন্তু জেলায় কৌতুহল— শীত কী এ বার তরান্বিত হবে? আবহাওয়া দফতর বলছে, বৃষ্টি কমে রোদ উঠলেও তাপমাত্রা আরও একটু কমতে পারে। তবে সেটা সাময়িক। তার পরেই বাড়বে তাপমাত্রা।
তবে বৃষ্টি থামলেও কালীপুজো, দীপাবলির রাতে গায়ে নিতে হতে পারে হালকা গরম পোশাক। অনেক বছর পরে কালীপুজোয় এমনই সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সকলেই চাইছেন, আগে বৃষ্টি থামুক।