হুঁশিয়ারি: বাঁকুড়ার রবীন্দ্রভবনে তৃণমূলের কর্মশালায় বক্তৃতা দিচ্ছেন অরূপ চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র
গরীব মানুষের ঘর তৈরির জন্য অনেকে টাকা নিচ্ছেন, এমন করলে ‘ক্যানসার’ হবে— দলের নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যদের এই মর্মে সতর্ক করলেন তৃণমূলের বিদায়ী সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী। বিরোধীরা প্রায়ই অভিযোগ তোলেন, আবাস যোজনার টাকা নিয়ে নয়ছয় হচ্ছে। খোদ অরূপের মুখে এই কথা শুনে তাঁদের অনেকে কটাক্ষ করে প্রশ্ন তুলছেন, তা হলে কি অভিযোগটাই এক প্রকার মেনে নিল শাসকদল?
মানছেন না জেলা তৃণমূলের নেতারা। এর আগেও দলের কর্মিসভা বা বিভিন্ন কর্মশালায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে কর্মীদের কড়া ভাষায় সতর্ক করতে দেখা গিয়েছে অরূপ চক্রবর্তীকে। এ দিনের কর্মশালা শেষে তিনি বলেন, “দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেব না। রাজ্যের উন্নয়নের জন্য মুখ্যমন্ত্রী দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছেন। যাঁরা আগামী দিনে পঞ্চায়েত চালাবেন, তাঁরা যাতে কোনও ভাবেই দুর্নীতিগ্রস্থ হয়ে না পড়েন তাই জন্যই সতর্ক করেছি।”
শনিবার ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতে দলের সদ্য নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে একটি কর্মশালার আয়োজন করেছিল তৃণমূল। বাঁকুড়ার রবীন্দ্রভবনে ওই সভা হয়। সেখানে অরূপ বলেন, “বাড়ি তৈরির উপভোক্তাদের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা করে কেউ কেউ নিচ্ছে। ওই টাকা যারা নেবে তাদের ক্যান্সার হবে। গরীবের টাকা নিলে ক্যানসার হয়ে মরবে।” তাঁর পরেই মাইক হাতে নিয়েছিলেন সোনামুখীর পুরপ্রধান সুরজিৎ মুখোপাধ্যায়, শালতোড়া ব্লক তৃণমূল সভাপতি কালীপদ রায়। তাঁদের গলাতেও একই সুর শোনা গিয়েছে। সুরজিৎ বলেন, “তৃণমূল কর্মীরা সৎ। কিন্তু হাজারে এক জন ব্যক্তি আছেন, যিনি সরকারি বাড়ি বানানোর প্রকল্পে টাকা নেন। আর ওই ব্যক্তির জন্য আমাদের সবাইকে কালিমালিপ্ত হতে হয়। আমাদের সবার উচিত এই ধরনের ঘটনা দেখলে রুখে দাঁড়ানো।” কালীপদ বলেন, “ঘর বানানোর প্রকল্পে যদি আমরা স্বজনপোষণ করি তা হলে ঘরটাতো যাবেই, তার সঙ্গে পার্টিও যাবে। ভোটও যাবে। সব যাবে। মনে রাখবেন, আপনাদের সবার মূল্যায়ন কিন্তু হবেই। সেই দিনটার জন্য তৈরি থাকবেন।”
অরূপের মন্তব্যকে কটাক্ষ করে বিজেপির রাজ্য নেতা সুভাষ সরকার বলেন, “অরূপবাবুর কথা ফলে গিয়ে সরকারি গৃহ নির্মাণ প্রকল্পে দুর্নীতিবাজদের যদি ক্যানসার হওয়া শুরু হয়, তাহলে তৃণমূল পতাকা টাঙানোর লোক পাবে না। ওই দলের উঁচু থেকে নিচু— সমস্ত স্তরের নেতারাই দুর্নীতিগ্রস্ত।”