অর্ধনারীশ্বর মূর্তি। নিজস্ব চিত্র
বাংলার শোলা শিল্প নরওয়ের ট্রন্ডহিম আন্তর্জাতিক উৎসবে সেরার শিরোপা পেল। এবার বিদেশের মাটিতে নিজেদের শিল্পকলাকে ফুটিয়ে তুললেন বাংলার দুই শিল্পী। একজন বোলপুরের সুরুলের বাসিন্দা কমল মালাকার অন্যজন কলকাতার দমদমের বাসিন্দা শ্রীকান্ত পাল। কমলবাবু পেশাদার শোলা শিল্পী। আর শ্রীকান্তবাবু রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে দৃশ্যকলা বিভাগের শিক্ষক। দুজনেই এবার নজর কেড়েছেন ট্রন্ডহিম আন্তর্জাতিক উৎসবে।
বয়সে প্রবীণ কমলবাবু দীর্ঘদিন ধরে শোলাকে মাধ্যম করে বিভিন্ন শিল্পকর্ম করছেন। ইতিমধ্যেই তাঁর তৈরি শোলার দেবদেবীর মূর্তি, মডেল, গ্রিটিংস কার্ড-সহ বিভিন্ন সৃষ্টি বিদেশে পাড়ি দিয়েছে বিদেশে বহুবার। তাঁর হাতে তৈরি শোলার দুর্গাও বহুবার পাড়ি দিয়েছে বিদেশের মাটিতে। কিন্তু এবার এক অনন্য অভিজ্ঞতা নিয়ে দেশে ফিরলেন তিনি।
প্রতি বছরের মতো এবারও নরওয়ের ট্রন্ডহিম শহরে ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ট্রন্ডহিম আন্তর্জাতিক উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। নানা দেশের সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটানোই এই উৎসবের মূল উদ্দেশ্য। সেই উপলক্ষে দেশ-বিদেশের নানা শিল্পীর শিল্পকর্মকে তুলে ধরা হয়েছিল সেখানে। ওই উৎসবে শোলা, কাগজ ও রং দিয়ে আট ফুট লম্বা চার হাত ও পঁচিশটি মাথা বিশিষ্ট অর্ধনারীশ্বর মূর্তি তৈরি করেন কমলবাবু। অর্ধেক শিব এবং অর্ধেক পার্বতীর এই অর্ধনারীশ্বর দেখতে ভিড় করেন উৎসবে উপস্থিত দর্শকেরা। প্রশংসিত হন শিল্পী।
একই সঙ্গে ভারতীয় সংস্কৃতির ঐতিহ্যের বিষয়টিও তুলে ধরেন দুই শিল্পী। মূর্তিটি তৈরি করার ক্ষেত্রে কমলবাবুকে সাহায্য করেন শ্রীকান্তবাবু। তিনি জানান, মূর্তিটি তৈরি করতে তাঁদের সময় লেগেছে ছ’দিন। শ্রীকান্তুবাবু বলেন, ‘‘এই প্রথম বিদেশের মাটিতে ভারতীয় সংস্কৃতির উপর এমন একটি নান্দনিক শিল্পকলাকে তুলে ধরতে পেরে খুব ভাল লাগছে। আগামীদিনে এই ধরনের কাজ আরও বেশি করে করতে চাই।’’ অন্যদিকে, শোলা শিল্পী কমল মালাকার বলেন, ‘‘শোলা নিয়ে এতদিন বহু কাজ করেছি , কিন্তু বিদেশের মাটিতে শোলা নিয়ে এই ধরনের মূর্তি তৈরির কাজ আমার জীবনে এই প্রথম। বিদেশের শিল্পী ও দর্শকদের সামনে ভারতীয় শিল্প সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে পেরে খুব আনন্দ হচ্ছে।’’