তৃণমূলের এই কার্যালয়েই বিস্ফোরণ ঘটে। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত ভোটের মুখে ফের বোমা বিস্ফোরণ বীরভূমে। অভিযোগ, এ বার ঘটনাস্থল খোদ শাসক দল তৃণমূলের কার্যালয়। সোমবার সন্ধ্যায় বোলপুরের পাড়ুই থানার খুষ্টিগিরি তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে ওই বিস্ফোরণ ঘটে বলে অভিযোগ। বিরোধীদের দাবি, পঞ্চায়েত ভোটে সন্ত্রাসের জন্য বোমা মজুত করা হয়েছিল। অভিযোগ মানেনি শাসক শিবির। জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তেমন বড় ধরনের কোনও ক্ষয়ক্ষতি পাওয়া যায়নি।”
গত মার্চ মাসের ৩ তারিখ পাড়ুই থানারই ভেড়ামারি গ্রামের পূর্বপাড়ায় তৃণমূল নেতা হাফিজুল শেখের বাড়ি সংলগ্ন খামারবাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। তার রেশ কাটতে না কাটতে ফের পাড়ুই এলাকাতেই শাসক দলের দলীয় কার্যালয়ে বোমা বিস্ফোরণের অভিযোগ উঠল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খুষ্টিগিরি এলাকায় ৪-৫ বছর আগে ওই দলীয় কার্যালয়টি তৈরি হয়। সেখানেই দলীয় কর্মীদের আসা-যাওয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকম দলীয় কাজকর্ম চলত। এ দিন সন্ধ্যায় হঠাৎই সেখানে বোমা বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। ঘটনার খবর পেয়ে পাড়ুই থানার পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়।
তবে বোমা বিস্ফোরণের তীব্রতা ততটা না থাকায় তেমন কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে সূত্রের খবর। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে এই বোমা কোথা থেকে এলো, কারা রাখল এমন নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে এলাকায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, “কিছুদিন ধরে ঘরটি বন্ধ করেই রাখা হয়েছিল। কিন্তু সেই ঘরে কী ভাবে বোমা মজুত করা হলো তা ভেবেই অবাক লাগছে।”
ঘটনা হল, বারবারই বীরভূমে বোমা মজুত ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। কয়েক মাস আগেই মাড়গ্রামে বোমায় দুই তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু হয়। মল্লারপুরে বল ভেবে খেলতে গিয়ে বোমা বিস্ফোরণে আহত হয় চার শিশু। তার পরে পাড়ুইয়ে এক মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয় বিস্ফোরণের পর বিরোধীদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করার জন্য এই বোমা মজুত করে রাখা হয়েছিল। বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, “হিংসা ছড়ানোর জন্য এই বোমা মজুত করা হয়েছিল। কারা এই বোমা মজুত করেছিল তা জানতে সঠিক তদন্ত হোক।” তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “যারা বোমাবাজি করে বা যারা বোমা মজুত করে রাখে তারা দুষ্কৃতী। দল তাদের সমর্থন করে না। তবে এর পিছনে অন্য কোনও দলের নেতাকর্মীদের হাত রয়েছে কি না সেটিও দেখার বিষয়। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।’’