প্রতীকী ছবি।
নেতারা বলে দিচ্ছেন, তাঁদের কিছু করার নেই। দলের রাজ্য নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও আশার খবর কিছু মিলছে না। পুরভোটের টিকিট মিলবে কোন পথে—সে প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে তৃণমূলের বাঁকুড়ার নেতা-কর্মীদের একাংশের মধ্যে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই প্রায় দু’শো জন পুরভোটে লড়তে চেয়ে জেলা অফিসে নিজেদের ‘বায়োডেটা’ জমা করেছেন। টিকিট নিশ্চিত করতে লাগাতার নেতাদের বাড়িতে হত্যেও দিচ্ছেন অনেকে। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডটি এ বার মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। সেখানে এক তৃণমূল কর্মী নিজের স্ত্রীকে প্রার্থী করতে চেয়ে ‘বায়োডেটা’ জমা করেছেন। টিকিট যাতে নিশ্চিত হয়, সে ব্যাপারে এক জেলা নেতার কাছে দরবার করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর আক্ষেপ, “নেতারা সাফ বলে দিচ্ছেন, প্রার্থী নির্বাচনে তাঁদের কোনও হাত নেই।”
শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা নিয়ে জেলা তৃণমূলের এক প্রবীণ কর্মী বিভিন্ন জায়গায় ছুটে যাচ্ছেন। তবে এ নিয়ে নিশ্চিত আশ্বাস কোনও মহল থেকে না মেলায় হতাশ তিনি। তাঁর আক্ষেপ, “আমি দীর্ঘ দিনের তৃণমূল কর্মী। অথচ, টিকিট নিয়ে কেউ নিশ্চয়তা দিচ্ছে না।”
গত লোকসভা ভোটে বাঁকুড়া শহরের ২৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৩টিতেই এগিয়ে ছিল বিজেপি। এ বার পুরভোটের প্রার্থী নির্বাচন করতে গিয়ে তৃণমূল বেশ সতর্ক। গোটা প্রক্রিয়াটি বিশেষ পদ্ধতিতে হচ্ছে বলে দলের কিছু সূত্র দাবি করছে। সদ্য বাঁকুড়ায় এসে দলীয় কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করে জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী নির্দেশ দিয়েছেন, শহরের প্রতিটি ওয়ার্ড কমিটি সম্ভাব্য তিন জন প্রার্থীর ‘বায়োডেটা’ জেলা নেতৃত্বের কাছে জমা করবে। ব্যক্তিগত ভাবে কারও প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছে হলে সরাসরি জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে নিজের ‘বায়োডেটা’ জমা করে যেতে পারেন। প্রার্থী হতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের আবেদনগুলি জেলা নেতৃত্ব খতিয়ে দেখে পর্যালোচনা করে প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে তিন জনের নাম রাজ্যে পাঠাবে।
এ দিকে, পুরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে সাধারণ মানুষ কাকে প্রার্থী হিসেবে চান, তা জানতে বিশেষ সমীক্ষা শুরু করেছে ভোট-কুশলী প্রশান্ত কিশোরের টিম। তৃণমূল সূত্রে খবর, দলীয় ভাবে পাঠানো সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম প্রশান্ত কিশোরের টিমের সমীক্ষায় উঠে আসা লোকজনের মধ্যে রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখে প্রার্থী নির্বাচন করা হতে পারে। জেলা তৃণমূল সভাপতি শুভাশিস বটব্যাল বলেন, “আসন্ন পুরভোটে তৃণমূলের প্রার্থী হতে ইচ্ছুক মানুষজনকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। তবে সবাইকে জানিয়ে দিচ্ছি, প্রার্থী নির্বাচনে কারও হাত নেই। দল নানা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রার্থী বাছাই করতে চলেছে। তাই ব্যক্তিগত ভাবে কারও অনুরোধ আমাদের পক্ষে রাখা সম্ভব নয়।”
বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্রের কটাক্ষ, “প্রার্থী বাছাই নিয়ে তৃণমূল এ বার যতই সতর্ক হোক না কেন, তা নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। মানুষ লোকসভা ভোটেই ওদের প্রত্যাখ্যান করেছেন। পুরভোটেও করবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।”