West Bengal Municipal Election 2020

‘ধরাধরি’ করে টিকিট নয় ভোটে

জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা অবশ্য জানাচ্ছেন, যদি কেউ ভেবে থাকেন, জেলার শীর্ষ নেতা বা মন্ত্রীদের ‘ধরে’ টিকিট জোগাড় করবেন, তা হলে তিনি ভুল ভাবছেন।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত 

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২০ ০১:৩৮
Share:

প্রতীকী চিত্র।

তদ্বিরের ফোন পাচ্ছেন জেলার শাসকদলের নেতা, মন্ত্রী, বিধায়কেরা। তদ্বির, পুরভোটে টিকিট দেওয়ার। ফোন করে নেতা-মন্ত্রীকে অনেক বর্তমান কাউন্সিলরই বলছেন—‘‘দাদা একটু দেখবেন। রাজনীতি ছাড়া তো কিছুই করি না। টিকিট না পেলে খুব সমস্যায় পড়ে যাব।’’

Advertisement

সংরক্ষণের গুঁতো, ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের টিমের সমীক্ষা এবং দলের শীর্ষ নেতাদের আস্থাভাজন হওয়া— এই তিন ‘বাধা’ কাটিয়ে পুরভোটের মনোনয়নে কার ভাগ্যে শিকে ছেড়ে, আদৌ টিকিট মিলবে কিনা, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রামপুরহাট, সাইঁথিয়া, সিউড়ি এবং দুবরাজপুর পুরসভার বেশ কয়েক জন তৃণমূল কাউন্সিলর। সঙ্গে রয়েছে সম্ভাব্য নতুন মুখের ভিড়ও। তাঁরাই পুরভোটে দলের টিকিট পেতে নেতা, মন্ত্রী বিধায়কদের কাছে এ ভাবে তদ্বির শুরু করছেন বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে।

সিউড়ির এক কাউন্সিলর এবং দুবরাজপুরের এক প্রাক্তন কাউন্সিলর বলেই ফেললেন, ‘‘টিকিট পেতে হবে। কারণ এর সঙ্গে শুধু আমি নই, আরও বহু মানুষ জুড়ে। টিকিট না পাওয়া মানে এলাকায় গুরুত্ব হারিয়ে যাওয়া।’’ ওই দুই কাউন্সিলর মনে করাচ্ছেন, মঙ্গলবার কলকাতায় তৃণমূল ভবনে দলের কাউন্সিলরদের নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে অভিযেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রশান্ত কিশোরের বার্তা আরও ভয় ধরিয়ে দিয়েছে। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, প্রার্থী কে হবেন, তা দল ঠিক করবে। কাউন্সিলরদের কাজ ও ভাবমূর্তি দেখেই প্রার্থী করা হবে।

Advertisement

জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা অবশ্য জানাচ্ছেন, যদি কেউ ভেবে থাকেন, জেলার শীর্ষ নেতা বা মন্ত্রীদের ‘ধরে’ টিকিট জোগাড় করবেন, তা হলে তিনি ভুল ভাবছেন। দলের জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ বলে দিচ্ছেন, ‘‘কোনও বর্তমান কাউন্সিলর বা টিকিট পেতে ইচ্ছুক কেউ যদি জেলা নেতাদের কাছে তদ্বির করেন, তা হলে প্রথমে তাঁর নামই বাতিল করা হবে!’’

২১ ওয়ার্ড বিশিষ্ট সিউড়ি পুরসভায় শাসকদলের কে কে প্রার্থী হবেন, সেটা নিয়ে বৃহস্পতিবারই বৈঠক করেছে পুরনির্বাচনে উপযুক্ত প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য নির্বাচিত ১১ জনের কমিটি।

কত জনের নাম সামনে এসেছে সেটা নিয়ে মুখ না খুললেও কমিটির এক সদস্য বললেন, ‘‘তদ্বির আছে। কিন্তু সামনে আসা নামের মধ্যে যাঁর জনভিত্তি বেশি, তিনিই প্রার্থী হবেন। কোথাও কোনও সমস্যা হলে জেলা নেতৃত্ব সেটা বিচার করেবন।’’ রামপুরহাটের ক্ষেত্রেও এমন আবদার আছে, কার্যত সেটা মেনে নিয়ে মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওয়ার্ড প্রতি তিন-চারটে নামও সামনে আসতে পারে। যার গ্রহণযোগ্যতা বেশি, তিনিই প্রার্থী হবেন দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী।’’

কাউন্সিলরদের একাংশ জানিয়েছেন, সংরক্ষণের জন্য অনেকেই এ বার প্রার্থী হতে পারছেন না। অনেক হেভিওয়েট কাউন্সিলরকে দল অন্য ওয়ার্ড থেকে দাঁড় করানোর কথা ভাবলেও পরের ধাপের কাউন্সিলর মরিয়া চেষ্টা করছেন টিকিট পেতে। প্রয়োজনে তাঁদের স্বামী বা স্ত্রীর জন্য প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। সিউড়ির পুরসভার ক্ষেত্রে এমন বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে নতুন না পুরানো মুখ প্রার্থী হবেন, সেটা নিয়ে দড়িটানাটানি শুরু হয়েছে। একই ছবি দু’বছর আগে মেয়াদ ফুরনো দুবরাজপুর পুরসভায়। অন্তত তিনটি ওয়ার্ডে দু’জন করে প্রার্থীর মধ্যে থেকে দল কাকে বেছে নেয়, সেই উত্তর না পাওয়া লেগে থাকতে চান সকলেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement