পাশে: সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র
কুষ্ঠরোগ নিয়ে কুণ্ঠা হঠাতে বেছে নেওয়া হল মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর প্রয়াণ দিবসকে। মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে কুষ্ঠরোগীদের হাতে হাত মিলিয়ে সেই বার্তাই দিলেন জেলা প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা।
এ দিন সকালে সিউড়িতে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে হাজির হন ২৪জন কুষ্ঠরোগী। চিকিৎসার পর সকলেই এখন সুস্থ। সেখানে হাজির ছিলেন জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী, জেলাপরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, বীরভূম স্বাস্থ্যজেলার সিএমওএইচ হিমাদ্রি আড়ি, জোনাল লেপ্রসি অফিসার ইন্দ্রনারায়ণ আচার্য চৌধুরী, সিউড়ি হাসপাতালের সুপার শোভন দে। জেলা প্রশাসনের কর্তারা ওই রোগীদের হাতে হাত মেলান। তাঁদের হাতে তুলে দেন গোলাপ।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি বছর ৩০ জানুয়ারি ‘কুষ্ঠরোগ বিরোধী দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। গত বছর থেকে ওই রোগ নিয়ে সচেতনতা গড়তে গ্রাম পঞ্চায়েত, পুরসভা, স্কুলগুলিকে জাতীয় কুষ্ঠ দূরীকরণ কর্মসূচিতে জুড়েছে দফতর। এ দিন প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত, পুরসভা ও স্কুলে স্কুলে শপথবাক্য পাঠ করানো হয়েছে। কর্মসূচিতে সামিল বীরভূমও। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ি জানিয়েছেন, এ দিন থেকে শুরু হয়েছে ‘স্পর্শ কুষ্ঠ’ প্রচার অভিযান।
চিকিৎসকেদের বক্তব্য, কুষ্ঠ একটি ‘ক্রনিক’ সংক্রামক রোগ। আক্রান্ত রোগীর হাঁচি, কাশি বা শ্বাসনালী-ক্ষরিত কিছুর মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়ায়। রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে চামড়ায় প্রভাব পড়ে। তামাটে, ফ্যাকাশে অসাড় দাগ দেখা যায়। চামড়ায় দাগ হলেও আসল ক্ষতি হয় স্নায়ুতে। অঙ্গহানি বা শরীরে বিকৃতি হতে পারে। জীবাণুর শরীরে প্রবেশ ও রোগলক্ষ্মণ প্রকাশের মধ্যে কমপক্ষে ৪-৫ বছর সময় লাগে। কোনও ক্ষেত্রে তা ১৫-২০ বছরও হতে পারে। কিন্তু প্রথম প্রথম শুধু দাগ ছাড়া কোনও অসুবিধা না থাকায় বা সচেতনতার অভাবে রোগীকে চিহ্নিত করে চিকিৎসার আওতায় নিয়ে আসাই যথেষ্ট সমস্যার। কেউ কেউ আবার জেনেও লোক লজ্জ্বার ভয়ে এড়িয়ে যান চিকিৎসা।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কুষ্ঠ দূরীকরণ কর্মসূচিতে সচেতনতা আরও বাড়িয়ে তোলাই উদ্দেশ্য। জোনাল লেপ্রসি অফিসার ইন্দ্রনীল আচার্য চৌধুরী বলেন, ‘‘কুষ্ঠরোগ বা রোগীকে নিয়ে কুসংস্কার দূর করতে এবং প্রাথমিক স্তরেই রোগীদের চিহ্নিত করতে এই কর্মসূচি।’’