West Bengal Lockdown

স্মার্ট ফোন নেই, চিন্তা ক্লাস নিয়ে

সম্প্রতি একটি নির্দেশিকায় ইউজিসি ইমেল, ফোন বা হোয়টসঅ্যাপের মাধ্যমে পড়াশোনা চালু রাখার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে।

Advertisement

তারাশঙ্কর গুপ্ত

পাত্রসায়র শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২০ ০২:০৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

‘লকডাউন’-এ অনলাইনে পড়াশোনা চালু রাখার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয় শুরু করেছে ‘ভার্চুয়াল ক্লাস’। জেলার কিছু কলেজও সেই পথে হাঁটছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, অনলাইনে পড়াশোনা করার মতো কতটা পরিকাঠামো রয়েছে জেলার ছাত্রছাত্রীদের হাতে? সম্প্রতি বাঁকুড়ার পাত্রসায়র কলেজের অধ্যক্ষ সন্তোষ কোনার কয়েকটি কলেজের পড়ুয়াদের নিয়ে সমীক্ষা করেছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, প্রায় কুড়ি শতাংশ পড়ুয়ার কাছে স্মার্ট ফোন নেই।

Advertisement

সম্প্রতি একটি নির্দেশিকায় ইউজিসি ইমেল, ফোন বা হোয়টসঅ্যাপের মাধ্যমে পড়াশোনা চালু রাখার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে। প্রত্যন্ত এলাকার ছাত্রছাত্রীদের ইন্টারনেট ব্যবহারের অন্যতম প্রধান মাধ্যম স্মার্ট ফোন। পাত্রসায়র মহাবিদ্যালয়, কোতুলপুরের চাতরা রামাই পণ্ডিত মহাবিদ্যালয় এবং বিষ্ণুপুরের স্বামী ধনঞ্জয় দাস কাঠিয়াবাবা মহাবিদ্যালয়— বাঁকুড়ার এই তিনটি গ্রামীণ এলাকার কলেজের কিছু বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সমীক্ষা করেছেন সন্তোষবাবু। দেখা গিয়েছে, দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী পরিবার থেকে আসা বেশ কিছু প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়ার নাগালের বাইরে রয়েছে স্মার্ট ফোন।

গত জানুয়ারিতে ‘টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া’-র প্রকাশিত রিপোর্টেও দেখা যাচ্ছে, ২০১৯ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইন্টারনেট ব্যবহারে গ্রাম ও শহরের মধ্যে বিস্তর ফারাক। এ রাজ্যে গ্রামাঞ্চলে গড়ে ১০ জনের মধ্যে দু’জন মোবাইল ফোন থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। শহরাঞ্চলে সেটা প্রায় ১১ জন। অর্থাৎ, শহরে এক জনের হাতে গড়ে একাধিক স্মার্ট ফোন রয়েছে।

Advertisement

এসএফআই-এর বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক জয়গোপাল কর বলেন, ‘‘এই অনলাইন ব্যবস্থাতেই আমাদের আপত্তি রয়েছে। গ্রামের অনেক ছাত্রছাত্রীর স্মার্ট ফোন নেই। অভিভাবকেরা কাজ হারানোয় অনেকে ফোনে টাকা ভরতে পারছেন না।’’

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি তীর্থঙ্কর কুণ্ডু বলছেন, ‘‘ছাত্রনেতাদের বলা হয়েছে, অনলাইন ক্লাস করতে না পারা ছাত্রছাত্রীদের নোট পৌঁছে দিতে। শিক্ষকেরাও সাহায্য করছেন।’’ এবিভিপির নেতা সনুপ পাত্র বলেন, ‘‘যে ছাত্রদের স্মার্ট ফোন আছে, ইন্টারনেট ব্যবহার করতে না পারা কোনও পড়ুয়াকে নিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এক সঙ্গে ক্লাস করতে অনুরোধ করা
হয়েছে তাঁদের।’’

সন্তোষবাবুর মতে, যে সমস্ত ছাত্রছাত্রী ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছেন না, কলেজ খুললে তাঁদের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া দরকার। বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সমস্যাটা আমাদের নজরে রয়েছে। যে সমস্ত পড়ুয়ারা ইন্টারেনেটে পড়াশোনা করতে পারেননি, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খুললে আমরা তাঁদের আলাদা করে চিহ্নিত করব। দেড় মাস বিশেষ ‘রেমেডিয়াল ক্লাস’ করানো হবে।’’ তিনি জানান, ‘ই-ক্লাসে’ যা পড়ানো হয়েছে, তা ছেপে দেওয়া হবে ওই সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement