পুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ডে। —নিজস্ব চিত্র
‘আনলক’ পর্বে বাস চলাচল চালু হলেও পরিষেবা অনেকটাই ধুঁকছে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ায়। বাসমালিকদের অভিযোগ, চড়তে থাকা ডিজ়েলের দাম আর যাত্রীর অভাবে দিন দিন তাঁদের লোকসান বাড়ছে। যাত্রীদের অনেকে আবার দাবি করছেন, বাস অনিয়মিত হওয়ায় রাস্তায় অপেক্ষা করতে হচ্ছে অনেকক্ষণ।
জেলা বাস মালিক সমিতি সূত্রের খবর, পুরুলিয়ায় ৪৯টি রুটে মোট বাস চলে প্রায় ৩৫০টি। তার মধ্যে ঝাড়খণ্ডের ১১টি রুটে প্রায় ৭২টি বাস চালানো আপাতত বন্ধ। পথে নেমেছে ২৫০টি বাস। কেঞ্জাকুড়া-পুরুলিয়া রুটের একটি বাসের কন্ডাক্টর নন্দলাল মণ্ডল সোমবার বলেন, ‘‘সপ্তাহের প্রথম কাজের দিন। তবু সব আসন ভরল না।’’ বাঁকুড়া জেলা বাসমালিক কল্যাণ সমিতির সম্পাদক সুকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, প্রায় ৪৫০টি বাসের মধ্যে আপাতত চলছে একশোর কিছু বেশি।
সুকুমারবাবুর দাবি, ‘আনলক’ পর্ব শুরুর পরে, এখন পথে বাসে সংখ্যা বাড়লেও যাত্রী বাড়েনি। অধিকাংশ রুটেই বাস চালিয়ে তেলের খরচটুকুও উঠছে না বলে দাবি তাঁর। সুকুমারবাবু বলেন, ‘‘পরিষেবা আমরা বন্ধ করব না। আশা করছি, ধীরে ধীরে যাত্রী বাড়বে।” এই পরিস্থিতিতে ভাড়া বাড়ানোর আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। পুরুলিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির সম্পাদক প্রতিভারঞ্জন সেনগুপ্তের দাবি, ডিজ়েলের দাম বাড়ায় এখন একটি বাস চালাতে দৈনিক ৬০০-৭০০ টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘ন্যায্য মূল্যে ডিজ়েল দেওয়ার জন্য রাজ্যের পরিবহণ সচিবকে সংগঠন থেকে সম্প্রতি চিঠি দিয়েছি।’’
সোমবার বাঁকুড়ার গন্ধেশ্বরী সেতুর কাছে রানিগঞ্জের বাসের অপেক্ষায় থাকা পিন্টু দাস বলেন, ‘‘প্রায় এক ঘণ্টা হতে চলল। জানি না, কখন বাস পাব।” পুরুলিয়ার পাড়া থানার পিঠাজোড় গ্রামের সুনীল দাস এ দিন পুরুলিয়ায় আসার জন্য ‘আনলক’ পর্বে প্রথম বার বাসে চাপলেন। তিনি বলেন, ‘‘ওঠার সময়ে নানা রকম আশঙ্কা ছিল। ফেরার সময়ে ভয়ভীতি অনেকটা কেটে গিয়েছে।’’
বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অসীমকুমার বিশ্বাস বলেন, “জেলায় বাস চলাচল অনেকটা বেড়েছে। যাত্রীদের সমস্যার অভিযোগ ওঠেনি।” পুরুলিয়া জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক দীনেশ দে বলেন, ‘‘বাস মালিকেরা প্রশাসনের অনুরোধ মেনে বাস চালাচ্ছেন। তাঁদের কী-কী সমস্যা হচ্ছে, তা রাজ্য পরিবহণ দফতরকে জানিয়েছি।’’