ত্রিপল খাটিয়ে দিন কাটছে রাস্তার ধারে। কুন্দকুন্দা বাজারে। নিজস্ব চিত্র
‘লকডাউন’-এ নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় সরকারি প্রকল্পে নির্মীয়মাণ বাড়িতে ঢোকা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে অনেক দুঃস্থ পরিবারের। কবে নির্মাণকাজ শুরু হবে, সেই অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁরা।
তবে যাঁরা জায়গার অভাবে নতুন বাড়ি তৈরির জন্য তাঁদের পুরনো ঘর ভেঙে ফেলেছেন, তাঁরা বেশি বেকায়দায় পড়েছেন। বিষ্ণুপুর পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কুন্দকুন্দা বাজারের চারটি পরিবারের ঝুপড়ি ভেঙে সরকারি প্রকল্পে বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়। জায়গার অভাব থাকায় উপভোক্তারা নিজেরাই চিটেবেড়ার ঘরে ভেঙে দিয়েছিলেন। অস্থায়ী ভাবে সামনের গির্জার প্রাচীরে ত্রিপল টাঙিয়ে কাটছে তাঁদের জীবন। আচমকা ‘লকডাউন’ চালু হওয়ায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে সরকারি প্রকল্পে বাড়ি নির্মাণের কাজ। সমস্যায় পড়েছেন গৃহহারা পরিবারগুলি।
ওই পরিবারের সদস্য পম্পা দাস, জ্যোৎস্না দাস, মীনা দাসের বক্তব্য, ‘‘ঝড়-জলের রাতে প্লাস্টিকের ত্রিপল নিরাপদ নয়। তা ছাড়া, মাথার উপরে বিদ্যুতের তার ঝুলছে। যে কোনও সময়ে ঝড় জলে বিদ্যুতের তার কেটে গিয়ে বিপদ ঘটতে পারে।’’ উপভোক্তাদের মধ্যে পিউ দাস জানান, প্রায় তিন মাস ধরে তাঁরা ওই অবস্থায় রয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘আমরা চাই, বিশেষ সুবিধা দিয়ে সরকার প্রকল্পের বাড়িগুলি নির্মাণের ব্যবস্থা করুক।’’
তাঁদের দাবি, সম্প্রতি ঝড়ে উড়ে গিয়েছে ত্রিপল। শিলা বৃষ্টিতে ভিজে গিয়েছে বিছানা ও পোশাক। ওই পরিবারের সদস্য পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী অর্পিতা লোহার বলে, ‘‘জানলা-দরজা না হোক, বাড়ির ছাদ হলেই ঢুকে পড়ব অসম্পূর্ণ বাড়িতে।’’
৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবপ্রিয় বিশ্বাস বলেন, “আমি বাড়ি ভাঙার সময় ওদের ভাড়া বাড়ি দেখতে বলেছিলাম। প্রতিমাসে প্রতিটি পরিবারকে ৫০০ টাকা দেওয়ার কথাও হয়েছিল। তবে এই পরিস্থিতিতে তাঁদের যাতে কোনও স্কুলে সরানো যায়, সে জন্য বিষ্ণুপুর মহকুমা দফতরে আবেদন জানিয়েছি।’’
মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) মানস মণ্ডল বলেন, “লকডাউন-এর মধ্যে বাড়ি নির্মাণের ব্যাপারে কিছু বলা যাবে না। তবে পরিবারগুলি মহকুমা দফতর থেকে যাতে প্রয়োজনমতো ত্রিপল নিতে পারেন, তা দেখা হচ্ছে। তাঁরা চাইলে, স্থানীয় কোনও স্কুলে অস্থায়ী ভাবে থাকার ব্যবস্থা করতে পারি।”