প্রতীকী ছবি।
পাওয়ার কথা মার্চ মাসে। এক মাস পেরিয়ে গেলেও ‘স্পেশাল জি আর’-এর (বিশেষ সরকারি ত্রাণ) চাল পাননি পুরুলিয়ার আদ্রার মনিপুর গ্রামের কুষ্ঠ রোগীদের পরিবার। ‘লকডাউন’-এর জেরে তাঁদের রোজগার বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে ‘স্পেশাল জি আর’-এর প্রাপ্য চাল না পাওয়ায় সমস্যায় মনিপুরে কুষ্ঠ কলোনির ৩১৩ জন বাসিন্দা। জেলা প্রশাসনের কাছে এপ্রিলের মধ্যেই ‘স্পেশাল জি আর’ দেওয়ার আবেদন করে গ্রামের ‘কুষ্ঠ পুনর্বাসন কেন্দ্র’।
পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদারের আশ্বাস, দ্রুত ‘স্পেশাল জি আর’-এর বরাদ্দ চাল পেয়ে যাবে ওই পরিবারগুলি। তিনি বলেন, ‘‘বুধবারই মণিপুর গ্রামের কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত পরিবারগুলির জন্য বরাদ্দ ‘স্পেশাল জি আর’ পেয়েছি। ওই দিনই ৪০২ কুইন্টাল চাল দেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।” তবে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত উপভোক্তারা ‘স্পেশাল জি আর’ পাননি বলে দাবি কুষ্ঠ পুর্নবাসন কেন্দ্রের সম্পাদক নবকুমার দাসের।
মনিপুর গ্রামের কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত অনেকে ভিক্ষাবৃত্তি করেন। অনেকে কাচ, টিন, প্লাস্টিক কুড়িয়ে বিক্রি করেন। গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ জানাচ্ছেন, ‘লকডাউন’ চলায় এখন রোজগার বন্ধ। রেশন থেকে চাল, আটা পাওয়া দেলেও ‘স্পেশাল জি আর’-এর চাল না মেলায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে তাঁদের। নবকুমারবাবু বলেন, ‘‘কুষ্ঠ কলোনির বাসিন্দাদের বড় অংশ ‘স্পেশাল জি আর’-এর উপরে নির্ভরশীল। চাল না পাওয়ায় অনেকেরই সমস্যা হচ্ছে।”
কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত ব্যক্তিদের ‘স্পেশাল জি আর’ হিসাবে প্রত্যেক মাসে ১২ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। ‘রাজ্য কুষ্ঠকল্যাণ সমিতি’ সূত্রে খবর, ১৯৮১ সালে তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী রামনারায়ণ গোস্বামী কুষ্ঠ রোগীদের জন্য এই প্রকল্প শুরু করেছিলেন। প্রথম দিকে প্রতি মাসে মাথাপিছু আট কেজি করে চাল দেওয়া হত। ২০০০ সালে বরাদ্দের পরিমাণ বেড়ে হয় ১২ কেজি। পশ্চিম ও পূর্ব বর্ধমান, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনিপুর, ঝাড়গ্রাম ও পুরুলিয়ার কুষ্ঠ কলোনির বাসিন্দারা এই চাল পান। বছরে দু’বার ছয় মাসের চাল এক সঙ্গে দেওয়া হয়। নবকুমারবাবুর দাবি, ‘‘গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ছয় মাসের বরাদ্দ ‘স্পেশাল জি আর’এর চাল এখনও পাওয়া যায়নি।”
নবকুমারবাবু আবার রাজ্য কুষ্ঠকল্যাণ সমিতির সম্পাদক। তাঁর দাবি, গত ছয় মাসের ‘স্পেশাল জি আর’-এর চাল অন্য কুষ্ঠ কলোনিগুলির বাসিন্দারা পেয়েছেন। বাঁকুড়া জেলার কুষ্ঠ কলোনি চলতি বছরের এপ্রিল-সেপ্টেম্বর মেয়াদকালের ‘স্পেশাল জি আর’-এর চাল অগ্রিম পেয়েছে। গত ছ’মাসের চাল ইতিমধ্যেই পেয়েছেন পুরুলিয়ার অন্য দুই কুষ্ঠ কলোনি যমুনাবাঁধ ও শিমনপুরের উপভোক্তারা।