প্রতীকী ছবি।
সরকার অনুমোদিত দোকান থেকে সবে মদের ‘হোম ডেলিভারি’ শুরু হয়েছে জেলায়। কিন্তু, একের পর এক অর্ডার সহ নানা জিনিস সামলে সেটা কতটা সফল ভাবে কার্যকর ভাবে করা সম্ভব, শুরু থেকেই ধন্দে কারবারিরা।
অনুমোদিত কারবারিদের একাংশ জানাচ্ছেন, বিপুল চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ি বাড়ি মদ পৌঁছনোর মতো পরিকাঠামো তাঁদের নেই। দীর্ঘ দিন শুকনো থাকার পরে গলা ভেজানোর সুযোগ পেয়ে যে ভাবে দোকানের সামনে ভিড় জমাচ্ছেন মানুষ, তাতে অশান্তি বাড়ছে। সেই ভয়ে ইতিমধ্যেই হাত তুলে দিয়েছেন অনেকে। শনিবার দুবরাজপুরের একটি দোকান থেকে হোম ডেলিভারি শুরু হয়েছে, এই খবর চাউড় হতেই দোকানে বিশাল ভিড় জমে। বাধ্য হয়েই হোম-ডেলিভারি স্থগিত করতে হয়।
লকডাউন পর্বে প্রকাশ্যে মদ কেনাবেচা আইন বিরুদ্ধ হওয়ায় সরকার অনুমোদিত মদের দোকান বন্ধ ছিল পুরোপুরি। কিন্তু, সুরা রসিকদের থামায় কার সাধ্যি। পুলিশ ও আবগারি দফতরের চোখে ধুলো দিয়ে ঘুরপথে দ্বিগুণ, তিনগুণ দামে দিশি বা বিলিতি মদের জোগান দিয়ে পয়সা কামানো চলছিলই। শুরু হয়ে গিয়েছিল কালোবাজারিও। কিছু দিন আগে দুবরাজপুর থানা এলাকাতেই ঝাড়খণ্ড থেকে পাচার হয়ে আসা মদ বোঝাই একটি গাড়ি ধরা পড়ে। যাতে বিপুল পরিমাণে দিশি, বিলিতি মদ ছিল। তবে সবচেয়ে ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল, সুযোগ বুঝে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে চোলাই মদ তৈরির কারবার ব্যাপক ভাবে শুরু হওয়া।
জেলায় অনুমোদিত ৩০০ মদের দোকান বন্ধ থাকায় এক দিকে ব্যাপক রাজস্ব আদায় বন্ধ ছিল। অন্য দিকে, জেলার বিভিন্ন এলাকায় চোলাই মদের কারবার জমে ওঠা অবগারি দফতরের কাছে দুঃশ্চিন্তার ছিল। ভয় ছিল, বিষক্রিয়ায় কেউ যেন না মারা যান। দু’দিক বিবেচনা করেই অনুমোদিত দোকান থেকে হোম-ডেলিভারি করার সবুজ সঙ্কেত মেলে।
আবগারি দফতরের বীরভূমের সুপারিনটেন্ডেন্ট বাসুদেব সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘কালোবাজারি ও চোলাই মদের কারবার বন্ধ করার জন্যই হোম ডেলিভারির নির্দেশ এসেছে দিন কয়েক আগে। পরিকাঠামো রয়েছে ও ইচ্ছুক অনুমোদিত দোকানদারের সব ধরণের মদের হোম ডেলিভারি করতে বলা হয়েছিল। ফোন, হোয়াটসঅ্যাপ বা মেসেজ করে নির্দিষ্ট দোকানে অর্ডার দিলে সেই দোকানদার বাড়িতে পাঠিয়ে দেবেন।’’ নির্দেশে বলা হয়েছে, দোকান খোলা রাখা যাবে না। বা দোকানের সামনে ভিড় জমতে দেওয়া যাবে না। করোনা সংক্রমণ রুখতে যেটা খুব জরুরি। মদ বিক্রি করার আগে লাইসেন্সপ্রাপ্ত নির্দিষ্ট দোকানদারকে স্থানীয় থানা থেকে অনুমতি নিতে হবে।
এখানেই প্রশ্ন তুলছেন অনুমোদিত দোকানদারদের একাংশ। তাঁরা বলছেন, ‘‘যে সব দোকানের সঙ্গে বাড়ি বা গোডাউন যুক্ত, তাঁদের পক্ষে কারবার চালানো মুশকিল। একবার খবর পেলেই দলে দলে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতা। ঝামেলা হচ্ছে। পুলিশ ডাকতে হচ্ছে। ধুম পড়ে যাচ্ছে অর্ডার দেওয়ারও।’’ এঁদের প্রশ্ন, ‘‘এত ক্রেতার কাছে কী ভাবে মদ পৌঁছব। গোটাটাই সমস্যার হয়ে যাচ্ছে।’’
তবে দফতর সূত্রে খবর, সমস্যা কাটিয়ে দিন কয়েক হল বেশ কিছু লাইসেন্সপ্রাপ্ত দোকানদার কারবার চালাচ্ছেন। সব এলাকায় সফল ভাবে চালাতে পারলে উদ্দেশ্য সফল হবে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)