হাতেগোনা যাত্রী নিয়ে বেসরকারি বাস। সিউড়িতে সোমবার। নিজস্ব চিত্র
কিছু কম হলেও বাস চলছে। তবে হচ্ছে না যাত্রী। এই অবস্থায় ভাড়া না বাড়িয়ে কত দিন বাস পরিষেবা স্বাভাবিক রাখা যাবে সেই নিয়ে চিন্তায় জেলার বাস মালিক সংগঠনের নেতৃত্ব।
দিন তিনেক আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাড়া না বাড়ানোর শর্তে আগামী তিন মাস বাসপ্রতি ১৫০০০ টাকা করে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেন। কিন্তু, সেই সহায়তা পাবেন কেবল কলকাতার ৬০০০টি বেসরকারি বাস এবং মিনিবাস মালিকরা। জেলার কী হবে, ঘুরছে সেই প্রশ্নও।
জেলা বাস মালিক সংগঠনগুলির সদস্যদের থেকে জানা গিয়েছে, লকডাউনের আগে সিউড়ি বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রায় ৮০টি বাস বিভিন্ন রুটে যাতায়াত করত। বর্তমানে সিউড়ি থেকে ৬০টি মতো বাস চলাচল করছে। কেবল সিউড়ি থেকে সাঁইথিয়া ভায়া ইঁটাগড়িয়া বাদে সমস্ত রুটেই বাস চলাচল করছে। অন্য দিকে, লকডাউনের আগে রামপুরহাট থেকে প্রায় ১৬০টি বাস বিভিন্ন রুটে চলাচল করত। এখন বিভিন্ন রুটে ১২৭টি মতো বাস চলাচল শুরু হয়েছে। সোমবার ১২০টির মতো বাস চলাচল করে। বাস মালিক সমিতির সদস্যদের থেকে জানা গিয়েছে, রামপুরহাট থেকে অধিকাংশ রুটেই বাস চলাচল করছে। তবে যাত্রী না হওয়ায় বাস মালিকদের লোকসান হচ্ছে। তাই কিছু রুটে বাস চলাচল কম করছে।
যেমন, রামপুরহাট থেকে শালবাদরা রুটে দুটি বাস চলছে। এ ছাড়া নারায়ণপুর, বিষ্ণুপুর, ধূলিগ্রাম, বুধিগ্রাম সহ একাধিক রুটে বাস সংখ্যা অনেকটাই কম। জেলার বাস মালিক সমিতির রামপুরহাট শাখার সম্পাদক জামারুল ইসলাম বলেন, ‘‘ওই বন্ধের সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই। যেমন বাস
চলছিল সেই রকম চলেছে।’’ অন্য দিকে, বোলপুর স্ট্যান্ডে প্রায় ১৬০টি বাস আছে। তার মধ্যে এ দিন ১০০টিরও বেশি বাস চলাচল করেছে। জেলার বাস মালিক সমিতির বোলপুর শাখার সহ সম্পাদক সুনীল ঘোষ বলেন, ‘‘অবিলম্বে ভাড়া বৃদ্ধি করা এবং রাজ্য সরকার যে ভর্তুকি দিচ্ছে তা দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ভাড়া না বাড়ালে আগামী দিনে রাজ্য স্তরের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে বাস চালানো হবে কি না সেই নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’’
বাস মালিকদের দাবি, লকডাউন চলাকালীন সরকারের নির্দেশ মতো গাড়ি চালাচ্ছেন ঠিকই। কিন্তু, বাস চালাতে গিয়ে নিজেদের পকেট থেকে টাকা দিতে হচ্ছে। তাঁদের ব্যাখ্যা, কোনও বাস যদি ৪০ কিলোমিটারের ট্রিপ চলে তা হলে আগে প্রায় ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা আসে। সেখানে এখন পাচ্ছেন ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। ফলে প্রতিদিন ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা পকেট থেকে দিতে হচ্ছে। জেলা বাস মালিক সমিতির সহ সম্পাদক তন্ময় পৈতণ্ডী বলেন, ‘‘এই ভাবে আর কত দিন বাস চালানো সম্ভব হবে সেটা জানি না। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ভাড়া কিছুটা বাড়ানোর আবেদন করব। তাতে লাভের দরকার নেই। তবে পকেট থেকে ভর্তুকি যেন না দিতে হয়।’’