ছবি: পিটিআই
আতঙ্কিত হওয়া নয়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সবচেয়ে জরুরি সতর্কতা ও সচেতনতা। কী ভাবে এই রোগের সংক্রমণ থেকে বাঁচা যায়, সে ব্যাপারে স্বাস্থ্য দফতরের ওয়েবসাইটে প্রচার চলছে। বুধবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এক নির্দেশিকা এসে পৌঁছেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে। এই সময় জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কী করণীয়, তা ওই নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে। বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) হিমাদ্রি আড়ি নির্দেশিকার কথা স্বীকার করে জানিয়েছেন, নির্দেশিকায় যে যে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে, সেগুলি করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। কী ভাবে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত জন সচেতনতা গড়ে তোলা যায় এ ব্যাপারে আজ শুক্রবার বিকেলে বৈঠক করবেন জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু। জেলাশাসক জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য দফতরের ‘গাইডলাইন’ মেনেই বৈঠক হবে বিকেল চারটের সময়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আটকাতে কী কী করা উচিত, কী কী নয়, সে ব্যাপারে জন সচেতনতা গড়ে তোলাই উদ্দেশ্য। সিএমওএইচ, সব ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক (বিএমওএইচ), বিডিও-রা বৈঠকে থাকতে বলা হয়েছে। থাকবেন একটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের জেলার প্রতিনিধিরাও।
বিশ্বের নানা প্রান্তে মারণ থাবা বসিয়ে করোনাভাইরাস হানা দিয়েছে এ দেশেও। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পর্যবেক্ষণ, করোনা-আক্রান্ত দেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের মাধ্যমেই এ দেশে ছড়িয়ে পড়ছে রোগ। উদ্বেগের বিষয় হল, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩০। যেখানে মঙ্গলবার পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র ৬ জন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে চিন, ইরান-সহ করোনাভাইরাস সংক্রমণের শিকার দেশগুলি থেকে কেউ এ দেশে এলে তাঁর উপরে নজরদারি চালাতে হয়েছে বলা হয়েছে। বীরভূমে চিন ফেরত বেশ কয়েক জন বাসিন্দার উপরে নজরদারি চালানো গেলেও কম সংক্রামিত কোনও দেশ থেকে ফিরেছেন, এমন লোকজনকে খুঁজতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। কারণ অনেক সময় বিমানবন্দর থেকে ঠিক মতো তথ্য আসছে না জেলায়। বেশ কাঠখড় পুড়িয়ে সম্প্রতি তিন জনকে খুঁজে তাঁদের উপরে নজর রেখেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। নজর রাখা হচ্ছে তাঁদের সংস্পর্শে থাকা আত্মীয়পরিজনেদের উপরেও। যদিও সিএমওএইচ বলছেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত এ জেলার কারও শরীরেই ওই ভাইরাসের সংক্রমণের উপসর্গ রয়েছে বলে আমাদের কাছে খবর নেই।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জেলাকে যে যে পদক্ষেপ করার কথা বলা হয়েছে সেগুলি হল, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল এবং মহকুমা হাসপাতালে পৃথক আইসোলেশন ওয়ার্ড খোলার জন্য দ্রুত জায়গা চিহ্নিত করতে হবে। সেখানে বেশ কয়েকটি শয্যা রাখতে হবে। প্রয়োজনীয় আরও কিছু পরিকাঠামো যেমন চিকিৎসক ও নার্সদের জন্য পোশাক, মাস্ক তৈরি রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। সিউড়ি জেলা হাসপাতালে ৬ শয্যার আইসোলেশন গড়ার ভাবনা হয়েছে। হিমাদ্রিবাবু জানিয়েছেন, পৃথক আইলোলেশন ওয়ার্ড রয়েছে সিউড়ি হাসপাতালে। মাস্ক এবং ‘পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট’ বা পিপিই আছে। তা সত্ত্বেও অতিরিক্ত বেশ কিছু এল-৯৫ মাস্ক এবং পিপিই কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলার বিভিন্ন ব্লকের বিডিও-রা জানিয়েছেন জেলাশাসক ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য দফতর থেকে আসা চিঠি ‘ফরওয়ার্ড’ করেছেন। বৈঠকের পরেই আশু পদক্ষেপ নেওয়া হবে।