সিউড়িতে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে ‘চোখের আলো’ প্রকল্পের চশমা পরিয়ে দিচ্ছেন জেলাশাসক বিধান রায়। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
অন্য জেলার মতো বীরভূমের প্রত্যেকটি ব্লকে ‘মেগা বন্টন’ কর্মসূচি পালিত হল। প্রতিটি ক্ষেত্রে মঞ্চে বিভিন্ন প্রকল্পের প্রাপকদের প্রতিনিধি হিসেবে কয়েক জন উপস্থিত ছিলেন।
সিউড়ির রবীন্দ্রসদন মঞ্চে জেলাস্তরে এই কর্মসূচি হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক বিধান রায়, জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী-সহ প্রমুখ। অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে সবুজসাথীর সাইকেল, চোখের আলোর চশমা, স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডের মতো ৩০টি সরকারি প্রকল্পের সুবিধা ৫০ জন প্রাপককে দেওয়া হয়।
জেলাশাসক বলেন, ‘‘পঞ্চম দফায় দুয়ারে সরকারে বীরভূম জেলায় প্রায় ৭০০০ নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ বিলের ক্ষেত্রে ৫ কোটি ২৮ লক্ষ টাকার অনাদায়ী বিল আদায় করা সম্ভব হয়েছে এবং ২৭ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা বকেয়া বিল মকুব করা হয়েছে।’’ পাশাপশি, বীরভূমে ৯ লক্ষ ৬০ হাজার কর্মদিবস সৃষ্টি করা সম্ভব হয়েছে বলেও জানান জেলাশাসক। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী যে প্রকল্পগুলির শিলান্যাস করেন মঞ্চ থেকে তার বিশদ তালিকাও তুলে ধরা হয়। ভার্চুয়ালি সিউড়ি চৈতালি মোড়ে ৩ লক্ষ ৬১ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত রান্নাঘরের উদ্বোধন করা হয়েছে। একই সঙ্গে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের অধীনে ময়ূরেশ্বর ২ ব্লকের বেলুটি, মুরারই ১ ব্লকের ধিতোড়া, ময়ূরেশ্বর ১ ব্লকের ভগবতীপুর, ডাবক, কাঁকসা ও বাজিতপুরে পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্পেরও শিলান্যাস করা হয়। সিউড়ি ১ ব্লকের জুনিদপুর, সিউড়ি ২ ব্লকের ইন্দ্রগাছা, বোলপুর-শ্রীনিকেতন ব্লকের যজ্ঞনগর, কেন্দ্রডাঙাল, মহিদাপুর, সুরুল ও ইলামবাজারের চেল্লায় সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রেরও শিলান্যাস করা হয়।
জেলার অন্য ব্লকগুলিতেও একই পদ্ধতিতে সরকারি পরিষেবা প্রদানের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। ব্লকগুলির ক্ষেত্রে বিডিও, যুগ্ম বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, কর্মাধ্যক্ষ ও সদস্যদের উপস্থিতিতেই এই পরিষেবা বিলি করা হয়। দুবরাজপুর ব্লকের ক্ষেত্রে রবীন্দ্র সদন মঞ্চে এবং রাজনগর ব্লকে রাজীব গান্ধী হলে পরিষেবা প্রদানের আয়োজন করা হয়েছিল। নানুর ব্লক কমিউনিটি হলে একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস ও পরিষেবা প্রদান করা হয়। ব্লকে মোট ২৮টি প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়। এ দিন রামপুরহাট ১ ব্লকে ২১০ জন, রামপুরহাট ২ ব্লকে ১৫০ জন এবং ময়ূরেশ্বর ১ ব্লকে ২০০ জনকে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পান। রামপুরহাট ১ ব্লকের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন এলাকার বিধায়ক তথা ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, মহকুমাশাসক সাদ্দাম নাভাস, বীরভূম জেলাপরিষদের অধ্যক্ষ নীহার মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। বোলপুর-শ্রীনিকেতন ব্লক কার্যালয় থেকে মোট ১১৮ জন প্রাপককে বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া, ব্লকের বিভিন্ন স্কুলে মোট ৩৫০টি সাইকেল বিলি করা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
মহম্মদবাজার ব্লক কার্যালয় থেকেই এ দিন বিডিও অভিষেক মিশ্র, যুগ্ম বিডিও পুষ্পেন্দু মুখোপাধ্যায়, পলাশ বিশ্বাস প্রমুখের উপস্থিতিতে বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা ২০২ জনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। মুরারই ১, ২ ও নলহাটি ১ ব্লকেও নির্দিষ্ট পদ্ধতিতেই সরকারি পরিষেবা প্রদান করা হয়েছে। মুরারই ২ ব্লকের বিডিও জানান, এ দিন বেশ কয়েক জন কৃষককে কৃষি-যন্ত্রপাতি দেওয়া হয় এবং উন্নত ফলনের প্রয়োজনীয় পাঠও দেওয়া হয়। জেলার প্রত্যেকটি ব্লকে নির্বিঘ্নেই এই পরিষেবা প্রদান কর্মসূচি পালিত হয়েছে, কোথাও কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।