অনন্যা চক্রবর্তী, সৌম্যশ্রী দাস, শাহিনা খাতুন।
জেলার পড়ুয়ারা শীর্ষস্থান ধরে রাখল উচ্চ মাধ্যমিকেও। শুক্রবার ঘোষিত উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের মেধা তালিকায় প্রথম এক থেকে দশে মোট ২৭২ জন রয়েছেন। এঁদের মধ্যে জেলার ১৫ জন। তার মধ্যে আবার দশ জন ছাত্রী। অধিকাংশই প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুলের পড়ুয়া। মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া জেলার সকলেই সপ্তম থেকে দশম স্থানে আছেন।
জেলার স্কুল পরিদর্শক চন্দ্রশেখর জাউলিয়ার কথায়, ‘‘মাধ্যমিকের পরে জীবনের দ্বিতীয় বড় পরীক্ষা উচ্চ মাধ্যমিক। এই পরীক্ষা ভবিষ্যৎ জীবনের দিশার চাবিকাঠি। স্বাভাবিক ভাবে পরীক্ষার সময় কিছু চিন্তা থাকে পরীক্ষার্থীদের। তবে জেলার পরীক্ষার্থীরা যে ফল করেছেন তাতে অভিনন্দন।’’ তিনি জানান, মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া প্রত্যেকের বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তা ও মিষ্টি পৌঁছে দেওয়া হবে।
গত শুক্রবার প্রকাশিত হয়েছিল মাধ্যমিকের ফল। এক সপ্তাহের ব্য়বধানে শুক্রবার প্রকাশিত হয় উচ্চ মাধ্যমিকের ফলও। রাজ্যের প্রবণতা বজায় রেখে জেলায় এবারও ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রী বেশি ছিলেন। জেলায় এবার মোট পরীক্ষার্থীছিলেন ২৭ হাজার ৫৪৪ জন। পরীক্ষায় বসেছিলেন ২৬ হাজার ৩৬৯ জন। তাঁদের মধ্যে ছাত্রী ১৪ হাজার ৪৪৮ জন। ছাত্রের সংখ্যা ছিল ১১ হাজার ৯২১ জন। ছাত্রদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১০ হাজার ৭১০ জন। ছাত্রীদের মধ্যে উত্তীর্ণ ১২হাজার ৩০১ জন। মিলিত সংখ্যা ২৩ হাজার ১১ জন।
কেবল সংখ্যা নয়, মেধা তালিকাতেও মেয়েদের উজ্জ্বল উপস্থিতি। ১৫ জনের মধ্যে ১০ জন মেয়ে। পাশের হার ৮৭.২৭ শতাংশ। যা মাধ্যমিকের থেকে অনেকটা ভাল। তবে রাজ্যের গড় পাশের হারের তুলনায় জেলা কিছু পিছিয়ে। রাজ্যে গড় পাশের হার ৮৮.৪৪ শতাংশ।
মল্লারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী অনন্যা চক্রবর্তী এবং শান্তিনিকেতনের নবনালন্দা বিদ্যালয়ের ছাত্র শুভজিৎ মণ্ডল সপ্তম হয়েছেন। তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর ৪৯২। ৪৯১ পেয়ে অষ্টম স্থানে বীরভূমের পাঁচ জন। তাঁদের মধ্যে কালীগতি স্মৃতি নারীশিক্ষা নিকেতনের দুই ছাত্রী সৌমাশ্রী দাস ও শাহিনা খাতুন, বীরভূম জেলা স্কুলের ছাত্র দেবপ্রিয় চক্রবর্তী, জামালপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী মণিরা খাতুন, সাঁইথিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী নীলা কোঙার আছেন। ৪৯০ পেয়ে নবম স্থানে চার জন। বীরভূম জেলা স্কুলের ছাত্র অগ্নিভ সাহা, সাঁইথিয়া টাউনস্কুলের ছাত্র চিরন্তন বন্দ্যোপাধ্যায়, কোটাসুর উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী সৌমী মণ্ডল এবং সাঁইথিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী তুলি বন্দ্যোপাধ্যায়। দশম স্থানে চার জন। তাঁরা হলেন ময়ূরেশ্বর গার্লস হাই স্কুলের ছাত্রী মিলি কুণ্ডু, ইলামবাজারের জনুবাজার পীতাম্বর হাইস্কুলের সমীর গড়াই, খয়রাশোলের বড়রা হাই স্কুলের ছাত্রী সুপ্রিয়া পাল, জামালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী ঋষিতা মণ্ডল। প্রত্যেকে ৪৮৯ নম্বর পেয়েছেন।
শুধু সিউড়ি, সাঁইথিয়া বা বোলপুরের মতো শহর এলাকা নয়, ইলামাবাজার, মল্লারপুর, খয়রাশোলের মতো প্রত্যন্ত স্কুলের ফলও চমকে দিয়েছে অনেককে। কোভিড আবহে দু’বছর স্কুল বন্ধ থাকায় অনেককে বহু বিপত্তি পেরোতে হয়েছে। পরীক্ষাও হয়েছে অফলাইনে। তবু বাধা জয় করেছেন বহু জন।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।