বাঁ দিকে মাটির বাড়ির সামনে রিয়া দত্ত। ডান দিকে শিল্পা দত্ত। নিজস্ব চিত্র
দারিদ্রকে জয় করে নজির গড়লেন বাঁকুড়ার ওন্দার বহড়ামুড়ির দুই ছাত্রী।
এ বছর উচ্চমাধ্যমিকে ৪৯৮ নম্বর পেয়েছেন রিয়া দত্ত। ৪৯৭ নম্বর পেয়েছেন শিল্পা দত্ত। দু’জনেই বাঁকুড়ার ওন্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। কৃষ্ণনগর জ্যোতিন্দ্রকিরণ হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করে ওন্দা উচ্চ বিদ্যালয়ে কলা বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। রিয়ার বাবা সত্যরাম দত্ত এবং শিল্পার বাবা মিলনকৃষ্ণ দত্ত পেশায় দিনমজুর। শুক্রবার উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশিত হওয়ার পরে খুশির পাশাপাশি তাঁরা উদ্বিগ্নও।
কৃতী দুই ছাত্রী বলেন, “উচ্চ মাধ্যমিকের খরচ জোগাড় করা, সব বিষয়ে টিউশন দেওয়া বা রেফারেন্স বই কিনে দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না। কৃষ্ণনগর উচ্চ বিদ্যালয় ও ওন্দা হাইস্কুলের বহু শিক্ষক আমাদের সাহায্য করেছেন। তাঁরাই নিখরচায় পড়া দেখিয়ে দিয়েছেন। বিভিন্ন বই কিনে দিয়েছেন।’’
ওন্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফাল্গুনী মণ্ডল বলেন, “রিয়া ও শিল্পার উপরে আমাদের সবার নজর ছিল। দু’জনেই খুব দুঃস্থ পরিবার থেকে উঠে আসা মেধাবী ছাত্রী। স্কুলের শিক্ষকেরা যত দূর সম্ভব সাহায্য করেছেন। ওদের জন্য আমরা গর্বিত।’’ তবে আগামী দিনে দুই ছাত্রীর পড়াশোনার খরচ কী ভাবে চলবে তা নিয়ে চিন্তায় শিক্ষকেরাও।
শিল্পা ও রিয়া দু’জনেই এ বারে ইংরেজি পড়তে চান। ভবিষ্যতে শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তাঁরা। সত্যরামবাবু ও মিলনকৃষ্ণবাবু বলেন, “দিনমজুরি করে সংসার চালিয়ে মেয়েদের পড়ানোর খরচ জোগাড় করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। শিক্ষকদের সাহায্যে এত দূর ওরা এগিয়েছে। এর পরে কী ভাবে, কী হবে সেটাই বুঝতে পারছি না।”