প্রতীকী ছবি
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ১৬ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদনের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সংশোধন, সংযোজন এবং বিয়োজনের কাজ চলবে। অর্থাৎ, ভোটার তালিকা তৈরির প্রক্রিয়া শেষ হচ্ছে ১৫ জানুয়ারি। এর জন্য দু’দিনের বিশেষ অভিযান বা ‘স্পেশ্যাল ক্যাম্পেন ডে’ আয়োজিত হচ্ছে। শনিবার ছিল প্রথম দিন। আজ, রবিরারও বিশেষ অভিযান চলবে। চলতি মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত ভোটার তালিকায় নাম তোলা, সংশোধন, বিয়োজন করার শেষ সুযোগ ভোটারদের কাছে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রথম দিনের বিশেষ অভিযানে ভালই সাড়া ছিল। নতুন আবেদন তো পড়েইছে। তবে, ভোটার কার্ডে তথ্য সংক্রান্ত ত্রুটি সংশোধনের আবেদনও পড়েছে যথেষ্ট সংখ্যক। মোট নতুন ভোটার হতে চেয়ে বা তথ্য সংশোধনের জন্য কত আবেদন জমা পড়ছে, সেটা রবিবার বিকেলে জানা যাবে। প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত গোটা জেলায় ৩৪ হাজার ৭৫৭টি নতুন ভোটার হওয়ার আবেদন জমা পড়েছে।
কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী, ’২০ সালের ১ জানুয়ারি যাঁদের বয়স ১৮ বছর ছুঁয়েছে, অথচ ভোটার তালিকায় নাম তুলতে পারেননি, তাঁরা নাম তুলতে পারবেন। শনি ও রবিবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত বুথ লেভেল অধিকারিকেরা (বিএলও) বুথে বুথে বসবেন। অভিযানের সময় সেখানে থাকতে পারেন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, বুথ এজেন্টরা। ওই দিনগুলিতে নতুন নাম তোলানোর আবেদন ছাড়াও ভোটার তালিকায় সংশোধন ও বিয়োজনও জন্য আবেদনপত্র গ্রহণ করা হবে।
বীরভূমের জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু জানিয়েছেন, ১৮ বছরে পা দেওয়ায় কোনও ভোটারের নাম যাতে তালিকায় বাইরে না থাকে, সেই লক্ষ্যেই দু’দিনের ‘স্পেশ্যাল ক্যাম্পেন ডে’-র আয়োজন। এই বিষয়ে শুক্রবার জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি ও পদস্থ আধিকারিকদের একটি বৈঠক হয়। সেখানে বলা হয়েছে, এলাকার কারও নাম যাতে বাদ না যায়, সেটা দেখতে বুথে বুথে বিএলও-দের সাহায্যের জন্য রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি বা বিএলএ-রা থাকেন।
গত বছর নির্বাচন কমিশন ভোটারদের তথ্য যাচাইয়ের কর্মসূচি নিয়েছিল। কমিশন চেয়েছিল, ভোটারেরা নিজেদের তথ্য নিজেরাই যাচাই করুন। তাতে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কম। পাশাপাশি, ভোটারেরাও সচেতন হবেন। ভোটারদের ভোটের তালিকায় থাকা নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নাম-ঠিকানা-বয়স ঠিকঠাক আছে কিনা, তা অনলাইনে যাচাই করার সুযোগ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। বলা হয়েছিল, ন্যাশনাল ভোটার্স সার্ভিস পোর্টাল বা ভোটার্স হেল্প লাইনের মাধ্যমে অথবা স্মার্টফোন, কম্পিউটার থেকে, না হলে কোনও সাইবার ক্যাফে বা সহজ তথ্যমিত্র কেন্দ্রে গিয়ে অনলাইনে ভোটারেরা সেই সব তথ্য যাচাই করতে পারবেন।
গত বছর ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে এ কর্মসূচি শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল ১৬ অক্টোবর। কিন্তু সচেতনতার অভাব ও দুর্বল পরিকাঠামোয় ভোটারদের তথ্য যাচাই কর্মসূচি বা ইলেকটর্স ভেরিফিকেশন প্রোগ্রামে (ইভিপি) তেমন সাড়া না মেলায় কমিশন তা বাড়িয়ে প্রথমে ১৮ নভেম্বর এবং পরে ৩০ নভেম্বর করে। বিস্তর কাঠখড় পুড়িয়ে সেই সময়ের মধ্যে বীরভূমে ১০০ শতাংশ ইভিপির কাজ শেষ হয়।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তথ্য যাচাইয়ের সময় বিভিন্ন ভুলত্রুটি সংশোধনের জন্য আট নম্বর ফর্ম জমা দিয়েছেন অনেক ভোটার। সেই প্রক্রিয়া শেষ করে তার সামগ্রিক প্রতিফলন ভোটার তালিকায় দেওয়ার কাজ এখনও চলছে। কারণ, অনেক ভুল ত্রুটি থেকে গিয়েছিল। ইতিমধ্যেই যে-সব সংশোধিত কার্ড এসেছে, সেগুলিকে গুছিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে। জোর কদমে চলছে ডেটা এন্ট্রির কাজও। ৭ ফেব্রুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করার কথা।