ফাইল চিত্র।
বসন্ত উৎসবে দূষণ বিধি নিয়ে নজরদারি চালানোর বিষয়ে আবারও সরব পরিবেশকর্মীরা। গত বছর বসন্ত উৎসবে বিভিন্নভাবে পরিবেশ দূষণ করার অভিযোগ উঠেছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। শান্তিনিকেতনের পরিবেশ দূষণের কথা প্রধানমন্ত্রীর দফতরে জানিয়েছিলেন পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত। এই বছর বসন্ত উৎসব যাতে পরিবেশবান্ধব করা হয় তার জন্য বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ-সহ রাজ্য পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও রাজ্যের মুখ্য সচিবকে শুক্রবার একটি চিঠি পাঠান সুভাষবাবু। শুক্রবার তিনি দাবি করেন, গত বছর বসন্ত উৎসব পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে করা হয়নি। বসন্ত উৎসবে শব্দ বিধি ভেঙে উচ্চস্বরে বড় বড় বক্স বাজানো হয়েছিল, কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খোলা জায়গায় এভাবে মাইক বা বক্স বাজানো যায় না। এছাড়াও গত বার আবির বাতাসে যেভাবে মিশেছিল তাতে দূষণ বেড়েছিল। প্লাস্টিক, পলিথিনের ব্যবহারও দেদার হয়েছিল। এমনকি বসন্ত উৎসবের সময় প্রচুর পর্যটক শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন জায়গায় রান্নাবান্নার আয়োজন করে থাকেন তাতেও পরিবেশ দূষিত হচ্ছে মারাত্মকভাবে।
গত বছর বসন্ত উৎসবে আড়াই লক্ষেরও বেশি জনসমাগম হয়, পরিকাঠামো না থাকায়, শান্তিনিকেতন জুড়ে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল। ভিড়ের চাপে বহু পর্যটক অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। গতবছর বসন্ত উৎসবে বিশৃঙ্খলার কথা মাথায় রেখে এই বছর বসন্ত উৎসবে রাজি ছিল না বিশ্বভারতী। সেই খবর সংবাদমাধ্যমের সূত্রে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কানে পৌঁছতেই তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী। এরপরেই বিশ্বভারতী জানায় রাজ্য সরকার প্রশাসনিক সহযোগিতা করলে রীতি মেনে নির্ধারিত দিনেই বসন্ত উৎসব করতে রাজি তারা। এই বিষয়ে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার বলেন, ‘‘গত বছর বসন্ত উৎসবের দিন চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার কথা মাথায় রেখে এবার প্রথম থেকে কর্তৃপক্ষ দোলের দিন বসন্ত উৎসব করতে চায়নি। কিন্তু উপাচার্যের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর কথা হওয়ার পরেই বিশ্বভারতীতে বসন্ত উৎসব নিয়ে গত সপ্তাহে একটি আলোচনা হয়। সেই আলোচনা থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় রাজ্য সরকার যদি প্রশাসনিক সহায়তা দেয় তাহলে দোলের দিনই বসন্ত উৎসব হবে বিশ্বভারতীতে।’’ প্রশাসনিক সহযোগিতা চেয়ে ইতিমধ্যেই শিক্ষামন্ত্রী ও জেলা প্রশাসনকে বিশ্বভারতীর তরফ থেকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। যদিও জনসংযোগ আধিকারিক জানান, সেই চিঠির উত্তর এখনও পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে এ দিন সুভাষবাবুর বক্তব্য, ‘‘বসন্ত উৎসব হোক তাতে সমস্যা নেই। কিন্তু এই উৎসবকে পরিবেশবান্ধব করার জন্য বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছি, একই সঙ্গে দূষণ বিধি মানতে রাজ্যের মুখ্য সচিব ও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকেও বিষয়টি দেখার জন্য আর্জি করেছি। এরপরেও যদি এ বছর বসন্ত উৎসবে দূষণ বিধি লঙ্ঘন করা হয় তাহলে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে পরিবেশ আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হবে।’’