বন্দুক হাতে পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি। নিজস্ব চিত্র।
তারস্বরে বাজছে ডিজে। সামনে প্রচুর মানুষের ভিড়। সেখানেই এক ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে একে-৪৭ বন্দুক উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে। সম্প্রতি এ রকমই একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে নেটমাধ্যমে। বন্দুক হাতে ওই ব্যক্তির নাম সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি। বন্দুক হাতে তাঁর ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই জেলা জুড়ে তৈরি হয়েছে আলোড়ন।
ঘটনাটি ঘটেছে ১৮ অগস্ট, বুধবার রাতে। সে দিন পুরুলিয়া থেকে পুঞ্চা থানার লাখড়া গ্রামে গিয়েছিলেন সুজয়। গ্রামে ঢোকার মুখে তাঁর গাড়ি আটকে পড়ে মনসা পুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রায়। ওই গ্রামে বেশ কয়েকটি মনসা পুজো হয়। সেই পুজোর শোভাযাত্রা বেরিয়েছিল বুধবার। ভিড়ও ছিল ভালই। এই ভাইরাল হওয়া ভিডিয়ো ওই শোভাযাত্রারই দৃশ্য।
কিন্তু জনপ্রতিনিধির বন্দুক নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই বেঁধেছে বিতর্ক। এ ব্যাপারে সুজয় বলেছেন, ‘‘শোভাযাত্রায় আটকে পড়ে দেখতে পাই জেনারেটরে তারে শর্টসার্কিটের জেরে আগুনের ফুলকি বেরচ্ছে। ওই ভিড়ে কেউ বিষয়টি লক্ষ্য করেনি। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় আমি দেহরক্ষীদের তার খুলে দেওয়ার কথা বলি। তখন আমার দেহরক্ষী তাঁর বন্দুক আমার হাতে দিয়ে তার সরাতে যায়। ডিজে বক্সের উপর দিয়ে তারটি গিয়েছিল এবং অন্ধকারে তা দেখা যাচ্ছিল না। তাই আমি বন্দুক উঁচিয়ে সে দিকে ইশারা করি, যাতে তা সকলের নজরে আসে।’’
সুজয় পুরুলিয়া বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী হয়েছিলেন। সে সময় বুথের বাইকে সুজয়কে হুমকি দিয়েছিলেন, ‘‘গুলি করে মেরে দেব।’’ তা নিয়েও ছড়িয়েছিল বিতর্ক। বুধবারের এই ঘটনার সমালোচনা করেছে বিজেপি। বিজেপি জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘অস্পষ্ট একটি ভিডিয়ো দেখেছি। নিন্দনীয় ঘটনা। জেলা প্রশাসকের শীর্ষে থেকে যদি কেউ এ রকম কাজ করে তাহলে পুলিশের উচিত বিষয়টি তদন্ত করে দেখা।’’ ভিডিয়ো ভাইরাল হতে বিষয়টি নিয়ে নড়েচ়ড়ে বসেছে পুলিশ প্রশাসন। জেলা পুলিশ সুপার এস সেলভা মুরুগন বলেছেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত চলছে। সত্য জানার চেষ্টা কতরা হচ্ছে।’’