রাজু থান্দার। ফাইল চিত্র
চার বছর লড়াই চালিয়ে অবশেষে সত্যের জয় হল বলে মনে করছেন চার বছর আগে পুলিশ হেফাজতে মৃত যুবক রাজু থান্দারের স্ত্রী। অন্ন থান্দারের আক্ষেপ, ‘‘প্রথম থেকেই চেয়েছিলাম দোষীদের শাস্তি হোক। কিন্তু, সেই সময় পাশে দাঁড়ানোর মতো কাউকে পাইনি।’’ স্বামীর মৃত্যুর পর বোলপুর পুরসভায় তাঁকে অস্থায়ী কাজ কিছুদিনের পেয়েছিলেন। কিছুদিন পরে কাজ ছিল না।
বোলপুরের দর্জিপাড়ার বাসিন্দা অন্নর সঙ্গে ১৯ বছর আগে দুর্গাপুরের বাসিন্দা রাজু থান্দারের বিয়ে হয়েছিল। দর্জিপাড়ায় একটি চালাঘর তৈরি করে তাঁরা থাকছিলেন। রিকশা চালিয়ে যা উপার্জন হত, তাতেই কোনও মতে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে সংসার চলে যেত রাজুর। জীবনটা হঠাৎ বজলে যায় চার বছর আগের অগস্টে। চোর সন্দেহে রাজুকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে তাঁর দেহ মেলে।
এই ঘটনায় ‘দোষী’ পুলিশকর্মীদের শাস্তির দাবিতে প্রথম থেকেই লড়াই চালিয়েছে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি (এপিডিআর)। চলতি বছরের জুলাইয়েওঅভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিকের শাস্তির দাবিতে সংগঠনের সদস্যরা বিক্ষোভ দেখান। এত দিন পরে, ঘটনার মূল অভিযুক্ত তৎকালীন বোলপুর থানার আইসি প্রবীর দত্তের আত্মসমর্পণের ঘটনায় খুশি মৃতের পরিবার এবং এপিডিআর।
মৃতের স্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘প্রথম থেকেই আমরা অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের শাস্তি দাবি করেছিলাম। আজ ওই পুলিশ অফিসারের আত্মসমর্পণের ঘটনায় যেন আরও একবার সত্যের জয় হল।’’ এপিডিআরের বোলপুর শাখা সম্পাদক শৈলেন মিশ্র বলেন, ‘‘সেই সময় পুলিশ অপরাধ আড়াল করার জন্য নানা গল্প শুনিয়েছিল। পুলিশ লকআপেই পিটিয়ে যে মেরে ফেলা হয়েছিল রাজু থান্দারকে, তা ওই পুলিশ অফিসারের আত্মসমর্পণের ঘটনাতেই প্রমাণিত হল। আমরা চাই দোষীর উপযুক্ত শাস্তি হোক।’’ মৃতের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিও তিনি করেছেন।