দলে-দলে: বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভবন। ফাইল চিত্র
জেলার সমস্ত কলেজকে নিজের ছাতার তলায় নিয়ে এল বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়। নতুন পথচলায় এল বেশ কিছু বদলও।
বেশ কয়েক বছর আগে জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় চালু হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ কলেজই তার পরেও থেকে গিয়েছিল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। গত জানুয়ারিতে রাজ্য উচ্চশিক্ষা দফতরের নির্দেশিকা পাওয়ার পরে সেগুলিকে বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু হয়। বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে জেলার কলেজগুলিতে পড়ুয়ারা ভর্তি হবেন।’’
জেলার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আসার ফলে জেলার কলেজগুলির প্রশাসনিক কাজে সুবিধা হবে বলে মনে করছেন শিক্ষকদের একাংশ। তাঁদের মতে, এ বারে স্নাতকোত্তরে ভর্তির ক্ষেত্রেও ছাত্রছাত্রীরা আরও বেশি করে সুযোগ পাবেন। বাঁকুড়া সারদামণি গার্লস কলেজের অধ্যক্ষ সিদ্ধার্থ গুপ্তের কথায়, “এত দিন জেলার বাইরে বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় কলেজের প্রশাসনিক নানা কাজকর্মে অসুবিধা হচ্ছিল। এই জেলার পড়ুয়ারাও স্নাতকোত্তর পড়ার সুযোগ কম পাচ্ছিলেন। তবে এবার এই সমস্যা মিটবে।”
আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই জেলার কলেজগুলিতেও পঠনপাঠনের প্রক্রিয়ায় কিছু বদল আনা হচ্ছে। বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার কলেজগুলিতে চালু করা হচ্ছে ছ’মাসের সেমেস্টার কোর্স চালু করা হচ্ছে। নতুন সিলেবাস তৈরি কাজও প্রায় শেষের মুখে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানানো হয়েছে। দেবনারায়ণবাবু বলেন, “কলেজগুলিতে শিক্ষার পরিকাঠামো উন্নত করা আমাদের মূল লক্ষ্য। এ নিয়ে আমরা নানা ভাবনা চিন্তা চালিয়ে যাচ্ছি।” তিনি জানান, ইতিমধ্যেই বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ এবং শিক্ষকদের নিয়ে সিলেবাস কমিটি গড়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে রিসার্চ কমিটি গড়ার কাজও শুরু হয়েছে। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী এই কমিটিই জেলার বিভিন্ন কলেজে গবেষণা সংক্রান্ত বিভিন্ন নিয়ম নীতি নির্ধারন করবে।
ইতিমধ্যেই বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার ওলংগং বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মউ সাক্ষর করেছে বাঁকুড়ার সারদামণি গার্লস কলেজ এবং বাঁকুড়া সম্মিলনী কলেজ। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা জেলার এই দুটি কলেজে ঘুরেও গিয়েছেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওলংগং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ছাত্রছাত্রীরা বাঁকুড়ার ওই কলেজগুলির পড়ুয়া এবং শিক্ষকদের সঙ্গে নানা বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। যৌথ ভাবে করা হবে বিভিন্ন গবেষণার কাজও।
বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ইতিমধ্যেই বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজ ও বিষ্ণুপুর রামানন্দ কলেজের তরফে স্নাতকোত্তর পাঠ চালু করার আবেদনও জানানো হয়েছে। সেই আবেদন মেনেও নিয়েছে বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সরকারি নিয়ম মেনে শীঘ্রই ওই দু’টি কলেজে স্নাতোকোত্তর পাঠ চালু করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।