সেজেছে ঘোষগ্রামের লক্ষ্মী প্রতিমা। —নিজস্ব চিত্র।
সারা বছরই পুজো হয় লক্ষ্মীর। কোজাগরীতে প্রতিমা সাজানো হয় ডাকের সাজে। মল্লারপুরের ঘোষগ্রামে দারুমূর্তির লক্ষ্মীকে ‘গ্রামের দেবী’ হিসেবেই পুজো করেন গ্রামবাসী।
গ্রামে নিত্য পুজো হয় ধনদেবীর। কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় যজ্ঞে বেলপাতার পরিবর্তে ১০৮টি ক্ষীরের নাড়ু আহুতি দেওয়ার চল রয়েছে। গ্রামের বাসিন্দারা ছাড়াও আশপাশের গ্রামের মানুষ রাতে দেবীর কাছে পুজো দেন। অনেক দূর থেকেও বহু মানুষ আসেন পুজো দিতে। ঘোষগ্রামের লক্ষ্মীর বিশেষত্ব হল, এখানে পৌষমাসে পৌষলক্ষ্মীর পুজো হয়। প্রতি বৃহস্পতিবার কড়ির মেলা বসে।
ঘোষগ্রাম লক্ষ্মী মন্দির সেবায়েত কমিটির সদস্য গুরুশরণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জনশ্রুতি আছে, গ্রামের চাষি দয়াল ঘোষ চাষ করার সময়ে কাঁদরে পদ্মফুল দেখতে পান। ফুলটি তাঁর ছেলে নেওয়ার জন্য বায়না করে। কিন্তু চেষ্টা করেও পদ্মটি ছেলের হাতে তুলে দিতে পারেননি দয়াল। রাতে স্বপ্নাদেশ পেয়ে তিনি গ্রামের প্রান্তে একটি নিমগাছের তলায় সাধনারত কামদেব ব্রহ্মচারীর কাছে যান। পরে নিম গাছের নীচে লক্ষ্মীপুজোর প্রচলন করেন তিনি। তার পরে কান্দির রাজা কৃষ্ণচন্দ্র সিংহ ওরফে লালাবাবু ঘোষগ্রামে লক্ষ্মীমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন।’’
শোনা যায়, ১৩৫৬ বঙ্গাব্দে নতুন করে দারুমূর্তির লক্ষ্মী তৈরি করা হয়। ২০১৭ সালে ঘোষগ্রামের লক্ষ্মীমন্দির নতুন করে নির্মিত হয়। কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর রাতে সন্ধ্যারতি হওয়ার পরে মায়ের বিশেষ পুজো হয়।
পুজো চলাকালীন মন্দির সংলগ্ন আটচালায় ন’টি ঘট প্রতিষ্ঠা করে যজ্ঞ হয়। তাতেই রীতি অনুসারে ১০৮টি ক্ষীরের নাড়ু দেওয়া হয়।
রাতে মন্দির চত্বরে পঙ্ক্তি ভোজনের ব্যবস্থা থাকে। পুজো দিতে আসা মহিলারা মন্দির চত্বরেই রাত জাগেন। পর দিন সকালে আবার পুজো দিয়ে ফিরে যান তাঁরা।