সন্তানহারা বাবা-মাকে সান্ত্বনা স্থানীয়দের। —নিজস্ব চিত্র।
খড়ের ছাউনিতে আগুন লেগে মৃত্যু হল ২ শিশুকন্যার। বুধবার বেলা ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার ইন্দাস থানার নাড়রা গ্রামে। মৃত ২ শিশুর নাম সুস্মিতা শবর (৩) এবং পূর্ণিমা শবর (১)। কী ভাবে আগুন লেগেছে, তা এখনও অস্পষ্ট। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি থেকে ধনঞ্জয় শবর তাঁর স্ত্রী এবং ৩ সন্তানকে নিয়ে ধান কাটার কাজ করতে এসেছিলেন বাঁকুড়ার ইন্দাস থানার নাড়রা গ্রামে। ধানজমি সংলগ্ন এলাকায় খড়ের অস্থায়ী ছাউনি করে সপরিবার থাকতেন। ৩ সন্তানকে সেখানে রেখে অন্যান্য দিনের মতো বুধবার সকালে ধান কাটার কাজ করতে যান ধনঞ্জয় ও তাঁর স্ত্রী। কাজ করতে করতে খবর পান, তাঁদের ওই ছাউনিতে আগুন লেগেছে। ক্ষেত থেকে পড়িমরি দৌড় দিয়ে সে দিকে ছুটে গিয়েছিলেন স্বামী-স্ত্রী। কিন্তু যখন পৌঁছান, আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয়েছে দুই কোলের শিশুর। ৩ সন্তানের মধ্যে বড় ছেলেটি কোনও রকমে বেঁচে গিয়েছে।
ওই ঘটনার খবর পাওয়ার মাত্র সেখানে ছুটে যায় ইন্দাস থানার পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে বিষ্ণুপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠায় তারা। শুরু হয় তদন্ত।
দুই মেয়েকে হারিয়ে অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে বাবা ধনঞ্জয় শবর বলেন, ‘‘আমাদের সব শেষ হয়ে গেল! এখনই আমরা আমাদের বেলপাহাড়ির বাড়িতে ফিরে যেতে চাই।’’ ধনঞ্জয়ের আত্মীয় জগন্নাথ শবর বলেন, ‘‘ধনঞ্জয়ের সঙ্গে আমরাও এই গ্রামে ধান কাটার কাজ করতে এসেছিলাম। ছাউনি করে আছি সবাই। সকালে ছাউনির বাইরে বেরিয়ে দেখি ওর ছাউনি দাউদাউ করে জ্বলছে। ছুটে গিয়ে কোনও রকম ধনঞ্জয়ের বড় ছেলেকে ছাউনি থেকে বের করে আনি। কিন্তু ছোট দুই মেয়ে তখন ছাউনির ভেতর মশারির ভিতর ঘুমোচ্ছিল। জল দিয়ে ছাউনির আগুন যখন নেভাই, তখন দু’জন মারা গিয়েছে।’’ বলতে বলতে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন জগন্নাথ। পাশে তখন মাথা চাপড়ে দিয়ে কেঁদেই চলেছেন মা।