আবার হাতির হানায় মৃ্ত্যু! ক্ষোভে বনকর্মীদের আটকে রাখলেন গ্রামবাসীরা। —নিজস্ব চিত্র।
গভীর রাতে দলছুট হাতির হানায় মৃত্যু একই পরিবারের ২ সদস্যের। গুরুতর আহত ওই পরিবারের আরও ২ জন। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির বানারহাটের কলাবাড়ি চা বাগান এলাকার এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার গভীর রাতে ৩টি দলছুট হাতি ডায়নার জঙ্গল থেকে কলাবাড়ি এলাকায় খাবারের সন্ধানে ঢুকে পড়ে। তাদেরই ১টি হাতি পাশের গাড়ালাইন বস্তিতে ঢুকে তাণ্ডব চালায়। সেখানেই মৃত্যু হয় ৬৩ বছর বয়সি বাবুরাম মাঝি এবং ৫৬ বছরের বাহামুনি মাঝির। হাতির হানায় জখম হন আশা মাঝি (৩০) এবং রাজবীর মাঝি (৮)।
ওই হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে রাতেই পৌঁছে যান বিন্নাগুড়ি বন্যপ্রাণী স্কোয়াডের কর্মীরা। কিন্তু তাঁদের ঘিরে প্রবল বিক্ষোভ শুরু করেন গ্রামবাসীরা। খবর পেয়ে এলাকায় ছুটে যায় বানারহাট থানার পুলিশ। দীর্ঘ ক্ষণ বনকর্মীদের গ্রামে আটকে রাখা হয়। দেহ গাড়িতে তুলতে বাধা দেওয়া হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রায় প্রতি দিন রাতে জঙ্গল থেকে হাতির দল লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। ঘরবাড়ি ভাঙছে। ক্ষতি করছে জমির ফসলের। বার বার বন দফতরের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না। এমনকি, বন্যপ্রাণীর হানায় আহতদের চিকিৎসার জন্য টাকাও দেওয়া হচ্ছে না। মিলছে না ক্ষতিপূরণও। এমনকি যাঁরা বন্যপ্রাণী হামলায় আহত হচ্ছেন, তাঁদেরও সঠিক ভাবে চিকিৎসা করানো হচ্ছে না।
আংরাভাসা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পার্বতী ছেত্রীর অভিযোগ, ‘‘হাতির হামলায় প্রাণ যাচ্ছে মানুষের। বন দফতরের কর্মীদের খবর দিলে তাঁরা সঠিক সময়ে আসেন না। এমনকি ঘরবাড়ি ভাঙলে, ফসল নষ্ট করলেও ক্ষতিপূরণ সঠিক ভাবে দেন না।’’
অন্য দিকে, বণ্যপ্রাণী স্কোয়াডের রেঞ্জার শুভাশিস রায়ের সঙ্গে দূরভাষে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘হাতির হামলার ঘটনায় যে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁরা কলাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘হাতির হামলায় যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের পরিবারকে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। যাঁদের বাড়ি ভেঙেছে, তাঁরাও ক্ষতিপূরণ পাবেন।’’