বাকুঁড়ায় দুই শিশুর মৃত্যু। প্রতীকী ছবি।
জ্বর ও শ্বাসকষ্টের উপসর্গ-সহ অসুখে আক্রান্ত হয়ে দুই শিশুর মৃত্যু হল বাঁকুড়ায়। অ্যাডিনোভাইরাসে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হলেও এ ব্যাপারে নিশ্চিত নন বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
বুধবার বাঁকুড়া হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ১ মাস ও ৫ মাস বয়সি দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ওই দুই শিশুর শরীরেই অ্যাডিনোভাইরাসে সংক্রমণের মতো উপসর্গ ছিল। হাসপাতালের সুপার সপ্তর্ষি চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তবে তারা অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত কি না, তা স্পষ্ট নয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে।’’ সুপারই জানান, প্রায় একই উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আরও ৬৪ জন শিশু ভর্তি রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টাতেই ২৭ জন শিশু ভর্তি হয়েছে হাসপাতালে।
গত কয়েক দিনে জেলার হাসপাতালে শিশু ভর্তির সংখ্যা বাড়তে থাকায় উদ্বেগের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। শিশু মৃত্যুতে চিন্তার ভাঁজ জেলা প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের কপালে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকা হাতে পেয়েই বুধবার তড়িঘড়ি বৈঠক ডাকা হয় বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে। সেখানে শিশুদের স্বাস্থ্যের উপর নজরদারি বাড়ানো এবং শিশুদের জন্য ‘অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন’ (এআরআই) ইউনিট চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বুধবার কাজ শুরু করেছে ওই ইউনিট।
সামগ্রিক পরিস্থিতির বিচারে মঙ্গলবারই রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে নবান্নে জরুরি তলব করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের জেরে শ্বাসকষ্টে ভোগা শিশুদের চিকিৎসার জন্য ২৪ ঘণ্টার হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। তার কাজ দেখাশোনার জন্য উপ-স্বাস্থ্য অধিকর্তা (জনস্বাস্থ্য) গিরীশচন্দ্র বেরার নেতৃত্বে ১২ জনের একটি দল তৈরি করা হয়েছে। জারি করা হয়েছে বিশেষ নির্দেশিকাও। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মোতাবেক স্বাস্থ্য দফতরের জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, মহকুমা থেকে শুরু করে মেডিক্যাল কলেজ পর্যন্ত সব স্তরের হাসপাতালে পেডিয়াট্রিক এআরআই চালু করতে হবে, যাতে শিশুকে বহির্বিভাগে এসে অপেক্ষা করতে না হয়।
সেই নির্দেশিকার প্রেক্ষিতে সপ্তর্ষি বলেন, ‘‘আমরা সব দিক নজর রাখছি। এআরআই ইউনিট চালু করা হয়েছে। শিশুদের জন্য পৃথক টিকিট কাউন্টারের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। অ্যাডিনো ভাইরাসের উপসর্গ থাকা শিশুদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধ মজুত রাখা হয়েছে। নজর রাখা হচ্ছে জেলার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালগুলির উপরেও। সব মিলিয়ে পরিস্থিত মোকাবিলার জন্য আমরা সব দিক থেকে প্রস্তুত।’’