লড়াই: পুরুলিয়া শহরের নডিহায় জাতীয় সড়কে। ছবি: সুজিত মাহাতো
দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ির ভিতরে পুড়ে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। একটি ট্রাক ও একটি ট্রেলারের মুখোমুখি সংঘর্ষে বুধবার রাত ১টা নাগাদ এমনই কাণ্ড ঘটেছে পুরুলিয়া-জামশেদপুর (৩২ নম্বর) জাতীয় সড়কে, পুরুলিয়া শহরের নডিহায়। খবর পেয়ে দমকল ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। আগুন যখন নেভে, ততক্ষণে ট্রেলারের ভিতরে এক ব্যক্তি ঝলসে গিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ মৃতের পরিচয় উদ্ধার করতে পারেনি। কিছু দিন আগে বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরের মড়ারে রাতে দু’টি ট্রাকের সংঘর্ষে একই ভাবে আগুন ধরে গিয়েছিল। একই ভাবে পুড়ে মারা গিয়েছিলেন দুই গাড়ির মোট চার কর্মী।
স্থানীয় সূত্রের খবর, নডিহা মিষ্টিমহল এলাকায় দুর্ঘটনার শব্দে অনেকের ঘুম ভেঙে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, তাঁরা বেরিয়ে দেখেন, রাস্তায় মুখোমুখি দু’টি গাড়িতে আগুন জ্বলছে। কাছেই বাড়ি সোমনাথ পাত্রের। তাঁর কথায়, ‘‘যে আগুন লেগেছিল, ভয় হচ্ছিল বাড়িতে না ছড়িয়ে পড়ে!’’ স্থানীয় বাসিন্দা মণীন্দ্রনাথ জানা বলেন, ‘‘দ্রুত আগুন না নেভাতে পারলে বিপদ বাড়বে বুঝে, পুলিশকে ফোন করি।’’
খবর পেয়েই দ্রুত পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশ ও দমকলের একটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পৌঁছন পুরুলিয়া সদর থানার ওসি দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় আগুন আয়ত্তে আসে। ট্রেলার চালকের ক্যাবিন খুলে দেখা যায়, ভিতরে এক ব্যক্তির দেহ ঝলসে গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, তিনি ওই ট্রেলারের চালক। দুই গাড়ির বাকি কর্মীদের অবশ্য খোঁজ পাওয়া যায়নি। তাঁদের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। গাড়িগুলির নম্বরের সূত্র ধরে চালক-খালাসি বা গাড়ি মালিকের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
এ দিনও দুর্ঘটনার ভয়াবহতার কথা এলাকাবাসীর মুখে মুখে ঘুরেছে। স্থানীয় বাসিন্দা উজ্জ্বল পণ্ডিত বলেন, ‘‘দু’টি গাড়ির সংঘর্ষে যে এ ভাবে আগুন ধরে যেতে পারে, তা কখনও চোখে দেখিনি। ভয়াবহ অভিজ্ঞতা!-’’ ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রুখতে ওই রাস্তার বদলে রাতে ভারী যানবাহন বাইপাস দিয়ে ঘোরানোর দাবি তুলেছেন বাসিন্দাদের একাংশ। এলাকার বিদায়ী কাউন্সিলর মৌসুমী ঘোষ বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার পরে, বাসিন্দারা আমাকে ওই দাবি জানিয়েছেন। এ নিয়ে পুরপ্রশাসকের সঙ্গে কথা বলব।’’