রাইপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি ও এক কর্মাধ্যক্ষকে মারধরের ঘটনায় এ বার নাম জড়াল স্থানীয় মেলেড়া পঞ্চায়েত প্রধান তথা ব্লকের যুব তৃণমূল সভাপতি রাজু সিংহ ও তাঁর ভাইয়ের। ২১ জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশের জন্য যুব তৃণমূলের ব্যানারে পোস্টার দেওয়াকে কেন্দ্র করে বচসার জেরে রবিবার সকালে স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি শান্তিনাথ মণ্ডল, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ পল্টু রজক, মটগোদা পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান তারাপদ খাঁ-য়ের ছেলে বিবেকানন্দকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল যুব তৃণমূল নেতা রাজু সিংহ ও অনিল মাহাতোর গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। পরে পুলিশের কাছে প্রহৃত তিন জনই পৃথক পৃথক ভাবে রাজু, তাঁর ভাই সনৎ সিংহ, তৃণমূল কর্মী পিন্টু চক্রবর্তী-সহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ অবশ্য ওই ঘটনায় সোমবার দুপুর পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “হামলার ঘটনায় মেলেড়া পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ বেশ কয়েক জনের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে এখনও কাউকে ধরা যায়নি।’’
তৃণমূলের রাইপুর ব্লক সভাপতি জগবন্ধু মাহাতো, পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি শান্তিনাথ মণ্ডলদের সঙ্গে রাজু ও অনিল মাহাতোর বিরোধ এখন তুঙ্গে উঠেছে। রাইপুর পঞ্চায়েত সমিতিতে ক্ষমতাসীন জগবন্ধুবাবুর গোষ্ঠী। স্থানীয় সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত সমিতির কর্তৃত্ব নিয়ে দুই গোষ্ঠীর কাজিয়া বারবারই প্রকাশ্যে চলে আসছে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নির্বাচনকে ঘিরেও দুই গোষ্ঠী আলাদা প্রার্থী দিয়েছিল। রবিবার সকালে মটগোদা এলাকায় প্রথম আক্রান্ত হন শান্তিনাথবাবু। স্থানীয় একটি দোকানে বসে থাকার সময় কয়েক জন তৃণমূল কর্মী তাঁকে ডেকে নিয়ে যান। এর পর মোটরবাইকে চাপিয়ে অমৃতপাল এলাকায় তাঁকে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। সেই সময় পেশায় ব্যবসায়ী বিবেকানন্দ খাঁকেও মারধর করা হয়। এর পর একদল বাইক বাহিনী রাইপুরে এসে থানাগোড়ার সামনে একটি দোকানে আড্ডা মারতে থাকা পল্টুবাবু ও বাপ্পাকে মারধর করে। খবর পেয়ে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা দু’জনকে উদ্ধার করেন।
ঘটনার পরেই অবশ্য তৃণমূলের ব্লক সভাপতি এই হামলার পিছনে রাজু সিংহের দলবল রয়েছে বলে অভিযোগ করেন। মঙ্গলবার রাজুবাবু অবশ্য ফের দাবি করেন, “ঘটনার সময় আমি বা আমার ভাই, কেউই ছিলাম না। আগে সিপিএম যে কায়দায় আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করত, এখন জগবন্ধু মাহাতো সেই কাজ করছেন। আসলে এলাকা থেকে ওঁদের পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে দেখেই আমাকে ও আমার অনুগামী দলের সক্রিয় কর্মীদের একের পর এক মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হচ্ছে।”