জঙ্গলমহল এলাকার দোকানে থাকবে এই বোর্ড। নিজস্ব চিত্র
হকের পাওনা কার কতটা, বোর্ডে লিখে টাঙিয়ে রাখতে হবে রেশনের দোকানের সামনে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত রেশনের দোকানের বাইরে ওই বোর্ড টাঙানোর নির্দেশ দিয়েছে পুরুলিয়া জেলা খাদ্য দফতর।
কোথাও নিয়মিত দোকান না খোলা, কোথাও প্রাপ্যের চেয়ে ওজনে কম জিনিস দেওয়া, কোথাও এক বা দু’সপ্তাহ না যেতে পারলে পরে প্রাপ্য না দিতে চাওয়া—এমন নানা অভিযোগ উঠে এসেছে জেলার বিভিন্ন রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে। প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে প্রশাসনের কর্তারা নিজের কানে সেই অভিযোগ শুনে এসেছেন। তদন্ত হয়েছে। আচমকা দোকানে হানা দিয়েছেন খোদ জেলাশাসক। তার পরেই প্রতিটি রেশনের দোকানের বাইরে টোল-ফ্রি একটি ফোন নম্বর লিখে রাখা বাধ্যতামূলক করে প্রশাসন। গণবণ্টন নিয়ে কোনও গ্রাহকের কোনও অভিযোগ থাকলে ওই নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানানো যায়। ‘গো-টু ভিলেজ’ কর্মসূচিতে গিয়ে জেলাশাসক গ্রামের মানুষজনকে এই বিষয়টি বুঝিয়েছেন। খাদ্য দফতরের এলাকার পরিদর্শকের ফোন নম্বরও দেওয়া হয়েছে মানুষজনকে। পুরো প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ করতে দোকানের বাইরে বোর্ডে প্রাপ্য লিখে রাখার নির্দেশ বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
কী ধরনের তথ্য থাকবে বোর্ডে? পুরুলিয়া জেলা খাদ্য নিয়ামক শুভ্রজিত চট্টোপাধ্যায় জানান, জঙ্গলমহল এবং ‘নন-জঙ্গলমহল’— দুই এলাকার রেশনের দোকানে এই বোর্ড টাঙাতে হবে। জঙ্গলমহলে এপিএল, বিপিএল ও অন্ত্যোদয় তালিকায় থাকা গ্রাহকেরা মাসে কতটা চাল, কতটা আটা আর কতটা চিনি পাবেন তা লেখা থাকবে। কোন জিনিসের কেজি প্রতি কত দাম, তারও উল্লেখ থাকবে বোর্ডে। লেখা থাকবে দোকান খোলার সময়। বোর্ডে লিখে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হবে— কোনও সপ্তাহে কোনও গ্রাহক জিনিস তুলতে না পারলে তিনি পরবর্তী আট সপ্তাহের মধ্যে তা তুলতে পারবেন। কোন অভিযোগ থাকলে দোকানে রাখা অভিযোগের খাতায় (কমপ্লেন বুক) লিখে আসা যাবে। টোল-ফ্রি নম্বরে ফোন করেও অভিযোগ
জানানো যাবে।
পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘গ্রামে ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলে দেখেছি, অনেকেই দু’টাকা কেজি চাল পাওয়া যায় এটা জানেন। কিন্তু নিজের প্রাপ্য কতটা, সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নেই। গ্রাহকেরা যাতে নিজেদের প্রাপ্য সম্পর্কে জানতে পারেন, সে জন্যই বোর্ড টাঙনোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’