পুরসভার বাইরে। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল পরিচালিত ঝালদা পুরসভার বিরুদ্ধে বেনিয়মের অভিযোগ তুলে পথে নামলেন তৃণমূল কর্মীদেরই একাংশ। শুধু পথে নামাই নয়, কার্যত পুরসভা ঘেরাও করে বিক্ষোভও দেখালেন তাঁরা। তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ এই ঘটনায় বর্তমান পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকারের সঙ্গে প্রাক্তন পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়ালের ‘কোন্দলে’র ছায়া দেখছেন।
সোমবার প্রদীপবাবুর কাছে স্মারকলিপি দেন শহর তৃণমূলের কর্মীদের একাংশ। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘গ্রিন সিটি’ প্রকল্পের ৭০ লক্ষ টাকা কোথায় গেল। ওই প্রকল্পে ৩ লক্ষ ৬৭ হাজার টাকা দু’বার তোলা হয়েছিল বলেও তাঁদের অভিযোগ। বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি তাঁরা পুরসভা চত্বরে পোস্টারও সাঁটেন। তাতে বেনিয়মের তদন্তের দাবির কথা লেখা হয়েছে।
ঝালদা শহর তৃণমূলের আহ্বায়ক দেবাশিস সেনের হুমকি, ‘‘আমরা বেনিয়মের তদন্ত চেয়েছি। তদন্ত না হলে পুজোর পরে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করব। পুরপ্রধানকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, দলের কেউ জড়িত থাকলে তাঁকেও যেন রেয়াত করা না হয়।’’ তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের দাবি, সুরেশবাবুকে নিশানা করতেই এ দিন বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছিলের দলের কর্মীদের একাংশ।
প্রদীপবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘বেনিয়মের অভিযোগগুলি আমরা খতিয়ে দেখব। তবে যে অভিযোগগুলি উঠেছে, সেই কাজগুলির কোনওটাই আমার আমলে হয়নি। তখন সুরেশ আগরওয়াল পুরপ্রধান ছিলেন।’’ পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুরেশবাবুর পাল্টা প্রতিক্রিয়া, ‘‘তদন্তে ভয় পাই না। তবে আমি পুরপ্রধানের পদ থেকে সরে আসার পরে কোনও টেন্ডার ছাড়াই কী ভাবে ৩ কোটি টাকার কাজ হল সেটারও যেন তদন্ত হয়।’’
ঝালদার বর্তমান এবং প্রাক্তন পুরপ্রধানের ‘কোন্দল’ বরাবরই পুর-শহরে রাজনৈতিক চর্চার অন্যতম উপাদান। এ দিনের ঘটনায় ফের সেই কোন্দল প্রকাশ্যে এল বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। তৃণমূল সূত্রের খবর, এ দিন যাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তাঁরা প্রদীপবাবুর অনুগামী বলেই পরিচিত। সুরেশবাবুর উপরে চাপ তৈরির লক্ষ্যেই তাঁরা এই কাজ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি করা নিয়ে সম্প্রতি দুই গোষ্ঠীর কোন্দল তীব্র হয়। সুরেশবাবু অভিযোগ তোলেন, তাঁর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা বঞ্চিত হচ্ছেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দারা বাড়ি তৈরির কিস্তির টাকা পাচ্ছে না। বিতর্কের মুখ অন্য দিকে ঘোরাতেই আমার বিরুদ্ধে এই সব করা হচ্ছে।’’
তৃণমূল ছাড়াও বেশ কিছু অভিযোগ তুলে এ দিন পুরপ্রধানের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে কংগ্রেস এবং সিপিএম।