দলনেত্রী আগে সিপিএমের নেতাদের সম্পর্কে যে মন্তব্য করতেন, নিজের দলের পঞ্চায়েত সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রায় সেই ভাষাতেই সতর্ক করতে শোনা গেল তৃণমূল বিধায়ককে। সোমবার গঙ্গাজলঘাটির অমরকাননে দলের কর্মী সম্মেলনে তৃণমূলের জেলা কোর কমিটির সদস্য তথা তালড্যাংরার বিধায়ক সমীর চক্রবর্তী আত্মসমালোচনার সুরে বলেন, ‘‘এক সময় যাঁরা বিড়ি খেতেন, পঞ্চায়েতে ভোটে জেতার পর তাঁরাই এখন গাড়ি-বাড়ির মালিক হয়েছেন। সতর্ক থাকুন। দল আপনাদের উপর নজর রাখছে।” আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট পেতে গেলে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি যে বজায় রাখতে হবে, তা এ দিন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন তিনি। সমীরবাবু যুক্ত করেন, “কোনও দাদা-দিদি নয়, এই দলে টিকিট দেন কেবল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বচ্ছ ভাবমূর্তি না হলে কাউকে টিকিট দেওয়া হবে না।”
দলের নিচুতলার সংগঠন মজবুত করতে জেলার ব্লকে ব্লকে সম্মেলনের কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল। গঙ্গাজলঘাটির সম্মেলনে মেজিয়া ব্লকের কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। এ দিন থেকেই ওই কর্মসূচির সূচনা হল। এ দিন শালতোড়া, গঙ্গাজলঘাটি ও বড়জোড়া ব্লকেও সম্মেলন হয়।
শালতোড়ার বিধায়ক স্বপন বাউরিকে বলতে শোনা যায়, “দলকে যাঁরা ভোটে হারাতে চেয়েছিল, এখন তাঁরাই নেতা হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।” মেজিয়া ব্লক তৃণমূল সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় ও স্বপনবাবুর দ্বন্দ্ব নতুন নয়। সমস্যা মেটাতে দলের জেলা নেতারা দুই নেতাকেই একসঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দেন। দলের অধিকাংশ নেতাই মনে করছেন, নাম না প্রকাশ করলেও স্বপনবাবুর বক্তব্যের ইঙ্গিত ছিল মলয়বাবুর দিকেই। যদিও মলয়বাবু প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হননি।
সম্মেলনে ছিলেন বাঁকুড়া জেলা সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী, জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খান, জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। সভাধিপতি বলেন, “সমস্ত পঞ্চায়েত প্রধান ও সদস্যেরা নিজেদের এলাকার উন্নয়নের কাজ খতিয়ে দেখুন। যে সব সমস্যার এখনও সমাধান হয়নি, তা পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই শেষ করতে হবে।”
সম্মেলনের প্রধান বক্তা কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া বলেন, “সিপিএম ও বিজেপিকে রুখে দিতে বুথ স্তরের কর্মীদের সক্রিয়তা দরকার। এলাকায় এলাকায় ঘুরে জনসংযোগ বাড়ানোয় আপনারা মন দিন।”
গঙ্গাজলঘাটি পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি জীতেন গড়াই জানান, মেজিয়া ও গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের অন্তত দেড় হাজার কর্মী সম্মেলনে ছিলেন।