অনাস্থায় জয়ের পরে তৃণমূলের উল্লাস। —নিজস্ব চিত্র।
বিরোধীদের আরও একটি পঞ্চায়েত দখলে নিল শাসকদল। এ বার মহম্মদবাজারের সেকেড্ডা।
গত ৬ তারিখ এই পঞ্চায়েতে অনাস্থা আনে তৃণমূল। বৃহস্পতিবার ছিল ভোটাভুটির দিন। সিপিএম এ দিনের ভোটাভুটিতে যোগই দেয়নি। ফল যা হওয়ার তাই। ভোটাভুটি শেষে মহম্মদবাজারের বিডিও তারাশঙ্কর ঘোষ জানিয়ে দেন, ১০-০ ব্যবধানে জিতেছে তৃণমূল।
গত পঞ্চায়েত ভোটে ১৪ আসনের এই পঞ্চায়েতে সিপিএম একক ভাবে ৮ ও শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক একটি করে আসন পেয়েছিল। তৃণমূল পেয়েছিল ৫টি আসন। ১০-০ ব্যবধানে অনাস্থাকারিরা জিতেছেন।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সেকেড্ডা পঞ্চায়েতে ৯-৫ ব্যবধানে জিতে বোর্ড গঠন করে সিপিএম। বামেদের অভিযোগ, বহু দিন ধরেই এই পঞ্চায়েত দখলে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছিল শাসক দল। শেষ পর্যন্ত অনাস্থা আনে তৃণমূল সদস্যেরা। অনাস্থা পত্রে তৃণমূলের পাঁচ সদস্য ছাড়াও উপপ্রধান ফব-র শেখ আসারুল-সহ সিপিএমের চার পঞ্চায়েত সদস্য সই করেন।
এ দিন অনাস্থার ভোটাভুটি নিতে পঞ্চায়েতে উপস্থিত ছিলেন বিডিও-র প্রতিনিধি রাধাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধান সাকিলাবিবি-সহ যে চার সিপিএম সদস্য দলবদল করেননি, তাঁদের অনুপস্থিতিতেই বোঝা যাচ্ছিল কী হতে চলেছে। বেলা ১১টা নাগাদ পঞ্চায়েতের বৈঠক কক্ষে ভোটাভুটি শুরু হয়। গোলমালের আশঙ্কায় ছিল কড়া পুলিশি পাহারা। মিনিট কুড়ির মধ্যেই ভোটাভুটি পর্ব শেষ হয়ে যায়।
গোটা সময়টা উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েত দখলের মূল নায়ক তৃণমূলের ব্লক নেতৃত্ব। দেখা গেল যুগ্ম সভাপতি গৌতম মণ্ডল, তাপস সিংহ, জেলা কমিটির সদস্য কালীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়, ব্লকের সাধারণ সম্পাদক তথা স্থানীয় নেতা আনারুল হক। অনাস্থায় বামেদের হারের খবর চাউর হতেই উল্লাসে মাতেন কয়েক’শো কর্মী।
যুগ্ম সভাপতির কথায়, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনের পর ব্লকে কার্যত সিপিএমে কোনও অস্তিত্ব নেই। যাঁরা উন্নয়ন ও কাজে বিশ্বাসী তাঁরা তৃণমূলের সঙ্গে আছেন। এ দিনের ভোটাভুটিতে সেটাই প্রমাণ হল।’’ প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে প্রধানের মোবাইলে বার বার ফোন করা হলে বেজে গিয়েছে তা। সিপিএমের মহম্মদবাজার লোকাল কমিটির সম্পাদক প্রভাষ মালের অবশ্য অভিযোগ, ‘‘অনৈতিক ভাবে পঞ্চায়েত দখল করেছে তৃণমূল।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘অনাস্থা- ভোটাভুটি সব লোক দেখানো। ভয় ও নানা প্রলোভন দেখিয়ে প্রশাসনকে ব্যবহার করে পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি-সহ বিরোধীদের সব কিছু ছিনিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ দিনের ঘটনা তারই অঙ্গ।’’
মহম্মদবাজারের বিডিও জানান, এ দিন ভোটাভুটির পর উপপ্রধান শেখ আসারুলকে অস্থায়ী ভাবে প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই পঞ্চায়েতে প্রধানের পদটি মহিলা সংরক্ষিত। এ দিন অনাস্থায় যাঁরা জিতেছেন তাঁদেরকে বলা হয়েছে এক মাসের মধ্যে প্রধান নির্বাচিত করতে।