প্রতীকী ছবি
দুর্নীতির অভিযোগে বাঁকুড়ার তিন নেতাকে শো-কজ় করল তৃণমূল। তাঁরা হলেন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিষ্ণুপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি শ্যাম মুখোপাধ্যায়, পাত্রসায়র ব্লক তৃণমূল সভাপতি পার্থপ্রতিম সিংহ এবং তালড্যাংরা ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি তাপস সুর। জেলা তৃণমূল সভাপতি শুভাশিস বটব্যালের দাবি, শুক্রবার রাতে তাঁদের শো-কজ় কর হয়। তবে সে সংক্রান্ত কোনও চিঠি পাননি বলে শনিবার তিন নেতাই দাবি করেছেন।
শুভাশিসবাবু বলেন, ‘‘শ্যামবাবু, পার্থপ্রতিম ও তাপসের বিরুদ্ধে সরাসরি রাজ্যে দুর্নীতির অভিযোগ জানানো হয়েছে। সে অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজ্যের নির্দেশেই আমরা তাঁদের শো-কজ় করেছি। দু’দিনের মধ্যে উত্তর দিতে বলা হয়েছে। উত্তর পেলে রাজ্য নেতৃত্বকে পাঠাব।” ঘটনায় তৃণমূলের অন্দরেই শুরু হয়েছে তর্জা। শ্যামবাবু বলেন, ‘‘শুভাশিসবাবু নিজের কল্পনার ভিত্তিতে আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছেন। কার প্ররোচনায়, তা জানি না।’’
শ্যাম মুখোপাধ্যায় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। বর্তমানে বিষ্ণুপুরের বিদায়ী পুরপ্রধান। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, দলের তরফে দেওয়া করোনা-ত্রাণের খাবার নিজের ছেলের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার নামে বিলি করার। পার্থপ্রতিমবাবু পাত্রসায়র পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, বালি পাচারে অভিযুক্ত একটি ট্রাকের চালককে পুলিশের হাত থেকে ছাড়াতে প্রভাব খাটানো এবং এলাকায় রেশন বিলিতে ‘হস্তক্ষেপ’ করার। দলের দেওয়া করোনা-ত্রাণ বিলি না করায় অভিযুক্ত তাপসবাবু।
পার্থপ্রতিমবাবুর বক্তব্য, ‘‘কোনও ট্রাকচালককে পুলিশের হাত বাঁচাতে আমি প্রভাব খাটাইনি। এ সব ভিত্তিহীন কথাবার্তা। রেশন বিলিতেও কোনও দিন হস্তক্ষেপ করিনি। কেন এমন অভিযোগ উঠছে, বুঝে উঠতে পারছি না।’’ তাপসবাবু বলেন, ‘‘নোটিস পেলে, যা জানানোর দলকেই জানাব।” শ্যামবাবু বলছেন, “দল আমাকে ত্রাণ বিলি করার জন্য খাদ্যদ্রব্য দেয়নি। নিজের উদ্যোগে লক্ষ লক্ষ টাকার খাদ্যদ্রব্য করোনা-পরিস্থিতিতে মানুষের হাতে পৌঁছে দিয়েছি। আমার ছেলেও নিজের উদ্যোগেই মানুষকে ত্রাণ দিয়েছে।”
ঘটনায় দলের জেলা সভাপতির দিকে পাল্টা আঙুল তুলছেন শ্যামবাবু। তিনি বলেন, ‘‘কোন নেতা, কোথায় কত ত্রাণ দিয়েছেন, তা নিয়ে জেলা সভাপতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করা উচিত।’’ তবে এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি শুভাশিসবাবু। তিনি বলেন, “রাজ্যের নির্দেশেই যা করার করেছি। আমার বিরুদ্ধে শ্যামবাবুর কোনও অভিযোগ থাকলে রাজ্য নেতৃত্বকে জানাতে পারেন।”
অভিযুক্ত নেতাদের বিরুদ্ধে কী ভাবে তদন্ত হবে তা রাজ্য নেতৃত্বই ঠিক করবেন বলে শুভাশিসবাবু জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “দলের নেতাদের দুর্নীতি রুখতে মুখ্যমন্ত্রী খুবই কড়া।’’ খবর জেনে বিজেপির বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকারের কটাক্ষ, “দুর্নীতি রোখার নামে এ সব নাটক করে আর মানুষকে ভোলাতে পারবে না তৃণমূল। প্রকৃতই দলে শুদ্ধকরণের ইচ্ছে থাকলে, এই তিন নেতাকেই বহিষ্কার করে দেখাক।”