সিউড়িতে অমিত শাহের সভা শুনছেন বিজেপি কর্মী। নিজস্ব চিত্র
পশ্চিমবঙ্গের জনতার উদ্দেশে মঙ্গলবার দিল্লি থেকে অনলাইনে বক্তৃতা দিয়েছেন বিজেপি-র শীর্ষ নেতা তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। ভার্চুয়াল এই সভার নাম ছিল ‘জনসংবাদ র্যালি’। জেলা জুড়ে এই ‘ভার্চুয়াল সভা’ দেখাতে মঙ্গলবার বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছিল বীরভূম বিজেপি। পাশাপাশি এই সভা জেলার প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষ দেখেছেন বলেও দাবি জেলা বিজেপির নেতাদের।
যদিও এই দাবি ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বিজেপির ফেসবুক পেজে এই ভার্চুয়াল সভার যে ভিডিয়ো শেয়ার করা হয়েছে, সেখান দেখা যাচ্ছে এ দিন বিকেল চারটে পর্যন্ত দেখেছেন ১৭ লক্ষের কিছু অধিক। যদি সারা রাজ্যে ১৭ লক্ষ মানুষ দেখেন, তা হলে কেবল বীরভূমেই কী ভাবে পাঁচ লক্ষ লোক দেখলেন—প্রশ্ন তৃণমূলের। দলের জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহের কটাক্ষ, ‘‘পাঁচের পরে শূন্য বসাতে কোনও পয়সা লাগে না! আমরা সকলেই জানি, দিল্লির লাড্ডু যে খেয়েছে সে ঠকেছে, যে খায়নি সেও ঠকেছে।’’
বিজেপি সূত্রে খবর, এ দিন জেলার বিভিন্ন প্রান্তের দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা টিভি চ্যানেলে অমিত শাহের ভার্চুয়াল র্যালির সরাসরি সম্প্রচার দেখেছেন। তা ছাড়া বিজেপির পক্ষ থেকেও বেশ কিছু জায়গায় টিভির মাধ্যমে সরাসরি বক্তৃতা দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বিভিন্ন জায়গায় দলীয় কার্যালয়, বিভিন্ন গ্রামে ‘ভার্চুয়াল র্যালি’ দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল বিজেপি-র তরফে। দলের জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল তাঁর বাড়িতে কয়েক জন কার্যকর্তাকে নিয়ে বক্তৃতা দেখেছেন। বিজেপি-র যুব মোর্চার পক্ষ থেকে সিউড়ির সাহিত্য পরিষদ হলে প্রজেক্টরের মাধ্যমে সভার সরাসরি সম্প্রচার দেখানো হয়। এ ছাড়াও জেলার তিন মহকুমার দলীয় কার্যালয়ে সভা টিভিতে দেখেছেন দলের কার্যকর্তারা। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়েছে বলে দাবি বিজেপি নেতাদের।
বিজেপি দলীয় সূত্রে খবর, জেলা থেকে প্রায় ৩০০ জন কার্যকর্তা ওই লাইভ সম্প্রচারের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। শ্যামাপদ বলেন, ‘‘এই র্যালি একশো শতাংশ সার্থক হয়েছে। জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ তাতে অংশগ্রহণ করেছিলেন। আমরা ওই কর্মসূচি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে সমস্ত রকমের ব্যবস্থা করেছিলাম।’’
এ দিন বক্তৃতায় এ রাজ্যে চাষিদের বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছেন অমিত শাহ। কিন্তু, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য কোনও তথ্যের উপরে ভিত্তি করে বলা নয় বলে দাবি তৃণমূলের। জেলা সহ-সভাপতির বক্তব্য, ‘‘ঘূর্ণিঝড় আমপানের জন্য আমাদের রাজ্যে যে ক্ষতি হয়েছে, তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এখনও পর্যন্ত মাত্র এক হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। যেখানে আমপানের প্রভাব পড়েনি, সেই বীরভূমেও চাষে ক্ষতি হয়েছে ৪৬১ কোটি টাকার। রাজ্য সরকার সর্বশক্তি দিয়ে আমপান ও করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলা করছে। বাড়িতে বসে তামাশা দেখার সময় এটা নয়!’’