তৃণমূলে দ্বন্দ্ব

পার্টি অফিসে পড়ল তালা

তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ের দখল কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে বিধায়ক এবং ব্লক সভাপতির গোষ্ঠীর সংঘাত দেখা দিল নিতুড়িয়ার ভামুড়িয়া এলাকায়। রঘুনাথপুরের তৃণমূল বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরির অনুগামীদের সঙ্গে দলের নিতুড়িয়া ব্লক সভাপতি তথা স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শান্তিভূষণপ্রসাদ যাদবের অনুগামী গোষ্ঠীর বিবাদ নতুন কিছু নয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নিতুড়িয়া শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৬ ০১:৩০
Share:

তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ের দখল কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে বিধায়ক এবং ব্লক সভাপতির গোষ্ঠীর সংঘাত দেখা দিল নিতুড়িয়ার ভামুড়িয়া এলাকায়। রঘুনাথপুরের তৃণমূল বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরির অনুগামীদের সঙ্গে দলের নিতুড়িয়া ব্লক সভাপতি তথা স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শান্তিভূষণপ্রসাদ যাদবের অনুগামী গোষ্ঠীর বিবাদ নতুন কিছু নয়। শনিবার দলের ভামুড়িয়া অঞ্চল কার্যালয়টির দখল নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে নতুন করে ঝামেলা শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত কার্যালয়টি তালা বন্ধ করে চাবি থানায় এনে রেখেছে পুলিশ।

Advertisement

রবিবার শান্তিভূষণপ্রসাদবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘নিতুড়িয়াতে বিধায়ক দলের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা নষ্ট করছেন। ওঁর অনুগামীরা জোর করে তালা ভেঙে দলের কার্যালয় দখল করার চেষ্টা করছে। পুরো বিষয়টি জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছি। প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যাব।”

সূত্রের খবর, ভামুরিয়ার অঞ্চল কার্যালয়টির দখল নিয়ে সম্প্রতি দুই গোষ্ঠীর মধ্যে আকচাআকচি শুরু হয়। কার্যালয়টির দখল শান্তিবাবুর অনুগামীদের হাতে ছিল। তাঁদের অভিযোগ, শনিবার দুপুরে তালা ভেঙে সেখানে ঢুকে পড়েন বিধায়ক অনুগামীরা। খবর পেয়ে অনুগামীদের নিয়ে থানায় যান শান্তিবাবু এবং জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সরিতা তুরি। বিধায়ক ঘণিষ্ঠ কয়েক জনের বিরুদ্ধে তাঁরা মৌখিক ভাবে অভিযোগ করেন। সূত্রের দাবি, কার্যালয়ের চাবি হাতে না পেলে থানা ঘেরাওয়ের হুমকি দেওয়া হয়। চাপে পড়ে পুলিশ চাবি উদ্ধার করে শান্তিবাবুদের হাতে তুলে দেয়। আর তাতেই বিধায়ক অনুগামীরা বেঁকে বসেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে শেষ পর্যন্ত কার্যালয় তালাবন্ধ করে চাবি থানায় এনে রেখে দেয় পুলিশ।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রের দাবি, বিধায়ক এবং ব্লক সভাপতির গোষ্ঠী বিবাদ শুরু বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই। গত বারের বিধায়ক পূর্ণবাবুর ফের টিকিট পাওয়া নিয়ে আপত্তি ছিল শান্তিবাবুর অনুগামীদের। কিন্তু নিতুড়িয়ার সরবড়ির বাসিন্দা পূর্ণবাবুকেই ফের প্রার্থী করা হয়। গতবারের চেয়ে বেশি ব্যবধানে এ বারের নির্বাচনে জেতেনও তিনি। কিন্তু নিতুড়িয়া ব্লকের বেশ কিছু এলাকায় ফল ভাল হয় না। সেই সময়েই বিধায়ক ঘনিষ্ঠরা অভিযোগ করেছিলেন, পূর্ণবাবুকে হারাতে অন্তর্ঘাত করেছেন দলের একাংশ। অভিযোগের তির ছিল ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধেই। গণনা মেটার পরে দ্বন্দ্বের ছবিটা প্রকাশ্যে আসে। নিতুড়িয়ায় দলের বিজয় উৎসবে দেখা যায়নি শান্তিবাবুকে। তৃণমূল সূত্রের খবর, পরবর্তীকালে এলাকায় দুই গোষ্ঠীর সভা এবং পাল্টা সভায় দ্বন্দ্ব আরও বেড়েছে।

ভামুরিয়া পঞ্চায়েতের দুই সদস্য সম্প্রতি তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে এলাকায় বিধায়ক অনুগামীদের প্রভাব বাড়ে। ওই দু’ জনের দলে যোগ দেওয়া উপলক্ষে বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল বিধায়ক অনুগামীরা। জেলা পরিষদের সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতোকে নিয়ে ওই অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন বিধায়ক পূর্ণচন্দ্রবাবু। কিন্ত শান্তিবাবু বা তাঁর অনুগামীরা সেখানে ছিলেন না। দলে নতুন আসা ওই দু’ জনকে নিজেদের দিকে টানতে পেরে স্বভাবতই উজ্জীবিত হয় বিধায়ক গোষ্ঠী। কার্যালয়ের দখল নেওয়ার চেষ্টা সঙ্গে তারই যোগ রয়েছে বলে দলীয় কর্মীদের একাংশ মনে করছেন।

তবে বিধায়কের দাবি, নিতুড়িয়ায় দলের কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে, দলের কর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকা চলবে না। সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।”

কিন্তু এ ক্ষেত্রে দলেরই ব্লক সভাপতি স্বয়ং তাঁর বিরুদ্ধে কার্যালয় দখলে মদত দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন।বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে পূর্ণচন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘কার্যালয়টি কারা খুলবে তা নিয়ে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। সবাইকে ডেকে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement