—প্রতীকী চিত্র।
রাত ফুরোলে জেলা পরিষদের স্থায়ী সমিতি গঠনের বৈঠক। পরিষদের ন’টি স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষের পদে কারা আসতে চলেছেন, তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে শাসকদলের অন্দরে। সূত্রের খবর, কোন সমীকরণে কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন হবে, তা নিয়ে দলের মধ্যে বেশ কিছু মত উঠে এসেছে। জেলা পরিষদের নানা আসনে জেতা দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা-নেত্রীদের গুরুত্ব দিয়ে কর্মাধ্যক্ষ করার মতো দলীয় বাধ্যবাধকতার বিষয়টিও চিন্তায় রেখেছে নেতৃত্বকে।
দল সূত্রের খবর, ‘ভারসাম্য’ বজায় রাখতে জেলার ন’টি বিধানসভা থেকে ন’জন কর্মাধ্যক্ষকে নির্বাচিত করার পক্ষে নেতৃত্বের একাংশ। তাতে অন্য অংশের আবার যুক্তি, সভাধিপতি ও সহ-সভাধিপতি যথাক্রমে বলরামপুর ও মানবাজার বিধানসভা এলাকা থেকে ইতিমধ্যে নির্বাচিত হয়েছেন। তাই ওই দুই এলাকা বাদ দিয়ে বাকি সাত বিধানসভা এলাকা থেকে কর্মাধ্যক্ষদের নির্বাচন করা হোক।
অন্য সমীকরণও রয়েছে। জেলাপরিষদের গত বারের সাত সদস্য এ বারে ফের প্রার্থী হয়ে জিতেছেন। তাঁদের মধ্যে নিবেদিতা মাহাতো সভাধিপতি ও সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় সহ-সভাধিপতি হয়েছেন। সেই যুক্তিতে গত বার বিদ্যুৎ, শিল্প ও অচিরাচরিত শক্তির স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ পদে থাকা নমিতা সিং মুড়াকে ফের কর্মাধ্যক্ষ করার জোরালো দাবি উঠছে। দলের একাংশ চাইছেন, নমিতাকে এ বারও গুরুত্বপূর্ণ স্থায়ী সমিতি দেওয়া হোক। একই যুক্তিতে গত বারে জেতা দলের মহিলা সংগঠনের জেলা সভাপতি সুমিতা সিং মল্লকেও গুরুত্বপূর্ণ কর্মাধ্যক্ষের পদ দেওয়ার দাবি উঠেছে। ওই তালিকায় রয়েছেন গত বারের সহ-সভাধিপতি তথা বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীবলোচন সরেনের স্ত্রী প্রতিমা সরেন ও গত বারে জেলা পরিষদে বিজেপির দলনেতা থেকে পদত্যাগ করে তৃণমূলে যোগ দিয়ে ফের জেতা অজিত বাউরিও।
এই সব সমীকরণ বজায় রাখার পাশাপাশি এ বারে জেলাপরিষদে জেতা দলের জেলার চেয়ারম্যান হংসেশ্বর মাহাতো, কাশীপুরের প্রাক্তন বিধায়ক তথা রাজ্যের সম্পাদক স্বপন বেলথরিয়া, রঘুনাথপুরের প্রাক্তন বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরির স্ত্রী তথা নিতুড়িয়া ব্লকের ‘বঙ্গজননী’ সংগঠনের সভানেত্রী সন্তোষী দত্ত বাউরিকে কর্মাধ্যক্ষ করার রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা উড়িয়ে দিতে পারছেন না দলীয় নেতৃত্ব। কংগ্রেসের ‘গড়’ হিসাবে পরিচিত বাঘমুণ্ডি বিধানসভায় এ বারে পঞ্চায়েত ভোটে ভাল ফল করেছে শাসকদল। তাই ওই বিধানসভা এলাকা থেকে জেতা জেলা পরিষদের সদস্যকেও কর্মাধ্যক্ষ করার পক্ষে দলের ওই এলাকার নেতৃত্ব।
ঘটনা হল, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষেরা জেলার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে থাকেন। বিশেষ করে পূর্ত, জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারী ও শিশুকল্যাণের মতো কর্মাধ্যক্ষদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সূত্রের খবর, ওই সব কর্মাধ্যক্ষ পদ পেতে নিজের মতো করে গুটি সাজাচ্ছেন অনেকে। তার মধ্যে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ পদে দাবিদারের সংখ্যা অনেকটা বেশি। জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা চালানোর পাশাপাশি রাজ্য নেতৃত্বের কাছেও দরবার করছেন অনেকে।
জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া তবে বলেন, “সভাধিপতি, সহ-সভাধিপতি পদের মতো কর্মাধ্যক্ষও কারা হবেন, তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। সেটাই সকলকে মেনে
চলতে হবে।”