তৃণমূলে ফের ‘ভাঙন’

বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, এ দিন কল্যাণী গ্রাম পঞ্চায়েত ভবনের সামনেই প্রধান রিনাদেবী-সহ ছ’জন সদস্য আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নেন। উপস্থিত ছিলেন বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক অমরনাথ শাখা, বিজেপির ওন্দা মণ্ডল সভাপতি কল্যাণ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ওন্দা শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৯ ০০:২৫
Share:

কল্যাণী পঞ্চায়েতে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ। নিজস্ব চিত্র

ফের তৃণমূলের দখলে থাকা পঞ্চায়েতে ভাঙন ঘটল ওন্দায়। সোমবার ওন্দার কল্যাণী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ বেশ কিছু সদস্যই তৃণমূল ছেড়ে যোগদান করলেন বিজেপিতে।

Advertisement

ওই পঞ্চায়েতের প্রধান রিনা শর্মা ও স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, কল্যাণী গ্রাম পঞ্চায়েতের ন’জন সদস্যের মধ্যে ছ’জনই এ দিন বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। যদিও ওন্দার বিধায়ক তথা প্রাক্তন জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খাঁ দাবি করেন, ‘‘কল্যাণী গ্রাম পঞ্চায়েতের তিন জন সদস্য বিজেপিতে গিয়েছেন। তাতে ক্ষমতার কোনও রদবদল হচ্ছে না।’’

বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, এ দিন কল্যাণী গ্রাম পঞ্চায়েত ভবনের সামনেই প্রধান রিনাদেবী-সহ ছ’জন সদস্য আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নেন। উপস্থিত ছিলেন বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক অমরনাথ শাখা, বিজেপির ওন্দা মণ্ডল সভাপতি কল্যাণ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।

Advertisement

রিনাদেবীর অভিযোগ, “মানুষের হয়ে কাজ করতে পারছিলাম না তৃণমূলে থেকে। তাই উন্নয়নের লক্ষ্যেই আমরা ছ’জন বিজেপিতে যোগদান করলাম।” বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, লোকসভা ভোটের ফলাফল প্রকাশের পরে কল্যাণী ছাড়াও ওন্দা ব্লকের নাকাইজুড়ি ও কাঁটাবড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশিরভাগ সদস্য বিজেপিতে যোগদান করেন। এ ছাড়াও ওন্দা ব্লকের চিঙ্গানি, চূড়ামণিপুর ও রতনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতেরও কিছু সদস্য তাদের দলে যোগদান করেছেন বলে বিজেপি নেতৃত্বের দাবি।

ওন্দার বিধায়ক অরূপবাবু অবশ্য এ দিন দাবি করেন, “কল্যাণী গ্রাম পঞ্চায়েতে আমাদের তিন সদস্য দলবদল করে বিজেপিতে গিয়েছেন। ওই পঞ্চায়েত এখনও আমাদের দখলেই রয়েছে।” বিডিও (ওন্দা) বিমলকুমার শর্মা বলেন, “কল্যাণী গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যদের দলবদল করার খবর আমার জানা নেই।”

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওন্দা ব্লকের বেশির ভাগ পঞ্চায়েতেই সব আসনে বিরোধী প্রার্থী না থাকায় সেই অর্থে ভোট হয়নি। তাই এই ব্লকের ১৫টি পঞ্চায়েতই সরকারি ভাবে তৃণমূলের দখলে। এই পরিস্থিতিতে লোকসভা ভোটের পরে বিজেপি শিবির চাঙা হতেই একের পর এক পঞ্চায়েতে ভাঙন ঘটায় ওই এলাকায় তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তি নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

অরূপবাবুর অভিযোগ, “সব জায়গাতেই বিজেপি আমাদের পঞ্চায়েত সদস্যদের ভয় বা হুমকি দেখিয়ে দলবদল করতে বাধ্য করছে। মানুষ এখনও তৃণমূলের সাথেই রয়েছেন।” জেলার রাজনীতির ওঠাপড়ার নিয়মিত পর্যবেক্ষকদের মতে, বিরোধীরা এতদিন শাসকদলের বিরুদ্ধেই তাঁদের নির্বাচিত সদস্যদের ভয় ও প্রলোভন দেখিয়ে নিজেদের দলে টানার এমন অভিযোগ তুলত। শাসকদলের বিধায়কের মুখে সেই কথা শুনে তাঁরাও অনেকে বিস্ময়
প্রকাশ করছেন।

তবে বিজেপি নেতা অমরনাথবাবুর দাবি, “আমরা কোথাও ভয় দেখিয়ে কাউকে যোগদান করাচ্ছি না। মানুষ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে আমাদের দলে আসছেন। তবে পঞ্চায়েত সদস্যদের দলে নেওয়ার আগে আমরা তাঁদের এলাকায় ভাবমূর্তি যাচাই করে নিচ্ছি।” তিনি আরও দাবি করেন, তলে তলে ওন্দা ব্লকের আরও বহু পঞ্চায়েত সদস্যই বিজেপিতে আসার জন্য যোগাযোগ চালাচ্ছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement