সাধারণত দলের জেলা কমিটির বৈঠক বোলপুরেই হয়ে থাকে। কখনও সেই বৈঠক সিউড়িতে হলেও রামপুরহাট মহকুমা এলাকায় এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের জেলা কমিটির বৈঠক হয়নি। রবিবার সেই বৈঠক বোলপুর বা সিউড়িতে না করে দলের জেলা সভাপতির নির্দেশে রামপুরহাট মহকুমা এলাকায় তারাপীঠের তারা উদ্যানে হচ্ছে। সেই নিয়ে তৃণমূলের ছোট বড় মাঝারি নেতাদের মনে প্রশ্নের অন্ত নেই।
মাসখানেক আগে বোলপুরে জেলা কমিটির বৈঠকে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে রামপুরহাট শহর সভাপতিকে পদ থেকে ৬ মাসের জন্য অপসারিত করা হয়েছিল। এবং মিটিং শেষে অপসারিত শহর সভাপতিও দলের অন্দরমহলের অনেক কথা বলেন। এবং শহর সভাপতির বক্তব্যকে বিরোধীরাও আন্দোলনের ইস্যু করে নিয়েছিল। দলের একাংশের বিশ্বাস, রামপুরহাট শহর সভাপতিকে কি আবার দলে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। এবং সেটা তারাপীঠের বৈঠকেই। পুরসভা নির্বাচনে দল সাফল্য পেলেও দুটি ওয়ার্ডে হার কাঁটার মতো বিঁধেছে জেলা সভাপতিকে। দুটি ওয়ার্ডে হার এবং ষোলোয় ষোলো না করতে পারা নিয়ে দলের জেলা কমিটির মিটিং-এ আলোচনা করা হবে বলে নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছিলেন জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু সেই মিটিং বোলপুরে না করে তারাপীঠে কেন হচ্ছে?
এ নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে দলের অন্দর মহলে। দলের নীচু তলার কর্মীদের প্রশ্ন তাহলে কী আবার অপসারিত রামপুরহাট শহর সভাপতিকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে! অনেকে আবার মনে করছেন, সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন, তার আগে জেলাতে এ বার রামপুরহাট মহকুমা এলাকায় বিরোধী শূন্য পঞ্চায়েত গড়ে তোলার লক্ষ্যে রামপুরহাট মহকুমার তারাপীঠকে বেছে নিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সুপ্রিমো। নলহাটি মডেলেই পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাই রামপুরহাট মহকুমায় এ বার বিরোধী শূন্য করার লক্ষ্য নিয়েই তারাপীঠে জেলা কমিটির বৈঠক বলে অনেকে মনে করছেন।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলার মধ্যে কেবলমাত্র রামপুরহাট মহকুমা থেকেই সিপিএম এবং কংগ্রেস তৃণমূলকে নির্বাচনে হারিয়ে আটটার মধ্যে ৪টি পঞ্চায়েত সমিতিতে জয়ী হয়েছিল। পরবর্তীতে দলবদল করে অনেক রামপুরহাট ২ এবং মুরারই ২ পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূল ক্ষমতা দখল করে। নলহাটি ১ এবং নলহাটি ২ পঞ্চায়েত সমিতি অবশ্য এখনও বিরোধীদের দখলে। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনে এ বার রামপুরহাট মহকুমাতে বিরোধী শূন্য করা লক্ষ্য নিয়ে তৃণমূল মাঠে নামতে চাইছেন। তারাপীঠে জেলা কমিটির বৈঠক— তার প্রথম ধাপ বলে মনে করছেন।