অনুব্রতের কাছের লোক বলে পরিচিত বিদ্যুৎ। —ফাইল চিত্র।
পেশায় তিনি পুরসভার গাড়িচালক। অনুব্রত মণ্ডল (কেষ্ট)-ঘনিষ্ঠ সেই বিদ্যুৎবরণ গায়েনের সম্পত্তি তাক লাগিয়ে দেবে কোনও বড় ব্যবসায়ীকেও। মাত্র দু’বছরে বোলপুরে বিদ্যুৎবরণ কিনেছেন ৫৬০ কাঠা জমি। যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৩৩ কোটি টাকার উপরে। পুরসভার গাড়ি চালকের সবচেয়ে বেশি সম্পত্তি পাওয়া গিয়েছে বীরভূম তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রতের বাড়ি এলাকায়। কেষ্ট-ঘনিষ্ঠ বিদ্যুতের এমনই সম্পত্তির তথ্য পাওয়া যাচ্ছে সরকারি খাতায়।
গরুপাচার মামলায় অনুব্রতের গ্রেফতারির পর তাঁর কন্যা-সহ একাধিক ব্যক্তি রয়েছেন সিবিআইয়ের নজরে। তাঁদের আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তির উৎস খুঁজছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। সেখানে প্রথম থেকেই নজরে এই বিদ্যুৎবরণ। তিনি অনুব্রতের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠদের মধ্যে এক জন বলে পরিচিত এলাকায়। প্রথম জীবনে বোলপুর পুরসভায় গাড়িখালাসি হিসাবে কর্মরত ছিলেন বিদ্যুৎ। পরে গাড়িচালক হন। আর গাড়িচালক হয়েই যেন সম্পত্তির শ্রীবৃদ্ধি ঘটেছে তাঁর। কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, বিদ্যুতের নামে থাকা এই বিশাল পরিমাণ জমি-টাকার আসল মালিক অনুব্রত। তবে সরকারি খাতায় বিদ্যুতের নিজের যে সম্পত্তি রয়েছে, সেটাও অবাক করার মতো।
বোলপুর এলাকায় বিদ্যুতের নামে মোট ৭২টি জমি। প্রায় ৫৬০ কাঠা জমির প্রতি কাঠার মূল্য যদি ছয় লক্ষ টাকাও ধরা হয়, তাহলেও বিদ্যুতের সরকারি খাতায় থাকা স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৩৩ কোটি টাকারও বেশি। আর অনুব্রতের এলাকা বোলপুরের কালিকাপুর মৌজাতেই ৫৭টি জমি রয়েছে বিদ্যুতের। ওই মৌজা এলাকাতেই বিদ্যুৎ এবং অনুব্রতের পাশাপাশি বাড়ি। এ ছাড়াও, বিদ্যুতের নামে বোলপুর মৌজায় দুটি, সুরুল মৌজায় দুটি, বল্লভপুর মৌজায় সাতটি এবং কঙ্কালীতলা মৌজায় চারটি জমি রয়েছে। উল্লেখযোগ্য ভাবে এই সমস্ত জমিই কেনা হয়েছে ২০২০-’২১ সালে। এমনটাই জানা যাচ্ছে সরকারি নথি থেকে। পাশাপাশি সিবিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, অনুব্রত-কন্যা সুকন্যার দুটি কোম্পানির ডিরেক্টর হিসাবেও রয়েছেন গাড়িচালক বিদ্যুৎ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এই জমিগুলি প্রভাব খাটিয়ে কম দামে কেনাবেচা হয়েছে। ফলে এক দিকে যেমন কালো টাকা সাদা করা হয়েছে, ঠিক তেমনই সরকারি টাকাও অর্থাৎ, মিউটেশন রেজিস্ট্রি করতেও কম টাকা দিতে হয়েছে।