দিন কয়েক আগে বাঁকুড়ায় এসে দলের দ্বন্দ্বে লাগাম দিতে বলেছিলেন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেত্রী দোলা সেন। তিনি ফিরে যাবার পরে জেলাতে দলের একের পর এক গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব সামনে উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার সকালে ফের মদনমোহনপুর অঞ্চলের ভগলপুর বুথ কমিটির সভাপতি মৃণালকান্তি বাগলিকে মারধর করার অভিযোগ উঠল দলেরই অন্য গোষ্ঠীর লোকজনের বিরুদ্ধে। মৃণালবাবুকে স্থানীয় গোগড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযোগের তির কোতুলপুরের বর্তমান ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রবীর গড়াইয়ের বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি কোতুলপুর তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি নিমাই ঘোষ এবং বর্তমান ব্লক সভাপতি প্রবীর গড়াইয়ের অনুগামীদের দ্বন্দ্বে এলাকার মদনমোহনপুর অঞ্চল কমিটির সভাপতি অশোক মন্ডলকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। অশোকবাবু দলীয় রাজনীতিতে নিমাইবাবুর অনুগামী বলে পরিচিত। তিনি এখনও কলকাতায় চিকিৎসাধীন।
সেই ঘটনার রেশ কাটার আগেই ফের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বচসার বিষয় ফের একবার প্রকাশ্যে এল। মৃণালবাবু বলেন, ‘‘সকাল ৯টা নাগাদ মোটরবাইকে ভাইকে নিয়ে জয়পুরের দিকে যাচ্ছিলাম। গ্রামের কাছে রাস্তার উপর প্রবীরের জনা পনেরো লোকজন মোটরবাইক থামিয়ে আমার উপরে চড়াও হয়। ভাই বাধা দিতে গেলে ওকেও চড়-থাপ্পড় মারে। পরে ওদের একটা মোটরবাইকে চড়িয়ে আমায় কোতুলপুরের পার্টি অফিসে নিয়ে গিয়ে ফের লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়। মাথায় আর পিঠে আঘাত রয়েছে।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘ওদের একটাই ক্ষোভ, আমি নিমাই ঘোষের সঙ্গে থাকি। তাঁকে ছেড়ে প্রবীর অনুগামী তুষারকান্তি বাগলির সঙ্গে না ভিড়লে আমায় খুন করা হবে বলেও হুমকি দিয়েছে।’’ তাঁর দাবি, হামলাকারীদের মধ্যে পাঁচ জনকে তিনি চিনতে পেরেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।
নিমাইবাবু বিষয়টির নিন্দা করে বলেন, ‘‘আমি কোতুলপুর ব্লকের তৃণমূল কোর কমিটির সদস্য। আমাকে কোনঠাসা করতেই আমার অনুগামীদের উপর হামলা হচ্ছে। আমি কলকাতায় গিয়ে দলনেত্রীকে সব জানিয়েছি। তবুও প্রবীরের তাণ্ডব কমছে না।’’
যদিও ঘটনায় রাজনীতির কোনও যোগ নেই বলে দাবি করে প্রবীরবাবু বলেন, ‘‘স্থানীয় স্তরে ঝামেলা থেকে ছোটখাটো বচসা হয়েছে বলে শুনেছি। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।