মতবিনিময়: পৌষমেলা নিয়ে বৈঠক। মঙ্গলবার বিশ্বভারতীতে। নিজস্ব চিত্র
পৌষমেলা শুরু হতে এখনও এক মাসেরও বেশি সময় বাকি। মঙ্গলবার বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর উপস্থিতিতে পৌষমেলা নিয়ে প্রস্তুতি-পর্বের বৈঠক হল। বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সম্মেলন কক্ষে ওই বৈঠক হয়। বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, অন্যান্য বছর মেলা শুরুর ১০-১২ দিন আগে প্রস্তুতি বৈঠক হতো। তার পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হত। উপাচার্য হিসেবে যোগদানের চার দিনের মধ্যেই পৌষমেলা নিয়ে আলোচনায় বসার উদ্যোগকেও সাধুবাদ জানিয়েছে বিশ্বভারতীর বিভিন্ন মহল।
২০১৭ সালের ১ নভেম্বর জাতীয় পরিবেশ আদালতের বিচারপতি এস পি ওয়াংদি এবং বিশেষজ্ঞ সদস্য পি সি মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়— পৌষমেলা হবে ছ’দিনের। এর পরে ভাঙা মেলা হিসেবে আর কিছু থাকবে না। ২০১৬ সালে মূল মেলা হয়েছিল তিন দিনের।
এ দিনের বৈঠকের পরে জানা গিয়েছে, এ বছরও ২০১৭ সালের মতোই মেলা হবে ছ’দিনের। মেলা তত্ত্বাবধায়ক কমিটিগুলিও মোটামুটি ভাবে একই রাখা হয়েছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে কমিটি ভাগ করা হয়েছে। উপ-কমিটিগুলিও ঠিক হয়েছে। বৈঠকে মেলা সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় যেমন দূষণ নিয়ন্ত্রণ, বায়ো টয়লেট, পার্কিং, বিদ্যুৎ, জল সরবরাহ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রদর্শনীর বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, মঙ্গলবারের বৈঠকে বিশ্বভারতীর কর্মিসভার সভাপতি ও সম্পাদক, অধ্যাপকসভার সভাপতি ও সম্পাদক, শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্মানীয় সম্পাদক, কর্মিপরিষদ, কর্মিমণ্ডলী, ভবনের অধ্যক্ষ এবং বিভাগীয় প্রধানদের একাংশ উপস্থিত ছিলেন। মেলার যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে অসিত গড়াইয়ের নাম প্রস্তাবিত। একই সঙ্গে দোকানের বিষয়টি অনলাইন করা এবং ই-টেন্ডারিংয়ের ব্যাপারেও আলোচনা হয়। দূষণ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভাবে সচেতন থাকবেন কর্তৃপক্ষ। বিনোদনমঞ্চে গত বছরের মতোই ছ’দিন অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কর্মিপরিষদের সম্পাদক অমর্ত্য মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘মেলাতে আমাদের কার, কী দায়িত্ব সেগুলি বণ্টন হল। সবাই এক সঙ্গে মিলে কাজ করব।’’ শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্মানীয় সম্পাদক অনিল কোনার বলেন, ‘‘স্টল ভাড়ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আনতে পুরো বিষয়টি অনলাইন করার কথা জানিয়েছি। ই-টেন্ডারিংয়ের কথাও বলা হয়েছে।’’ মেলার আহ্বায়ক গৌতম সাহার কথায়, ‘‘গত বছর আমরা মেলা থেকে ৯২ লক্ষ টাকা তুলে দিয়েছিলাম। এ বার সেটা কোটি ছাড়িয়ে যাবে আশা করছি। উপাচার্য এত দিন আগে বৈঠক করলেন, এটা খুবই ভাল পদক্ষেপ।’’ কর্মিসভার সম্পাদক বিদ্যুৎ সরকার জানান, এ বার অনেক আগে বৈঠক হল, তাই সবকিছুই গুছিয়ে করার একটা জায়গা তৈরি হয়েছে। এর পরে অবশ্য আরও কয়েক বার বৈঠকে বসবেন কর্তৃপক্ষ।
বৈঠক শেষে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পৌষমেলা শান্তিনিকেতনের গর্ব। আশা করছি, আমরা সব দিক থেকে সহযোগিতা পাব। যে সমস্ত প্রস্তাব আজ পেয়েছি সেগুলি নিয়েও ভাবনাচিন্তা করছি।’’