—প্রতীকী ছবি।
চলতি বছরে পুজোর মরসুমে পুরুলিয়া জেলায় মদের বিক্রি ছাপিয়ে গেল গত বছরকে। জেলা আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুজোর পঞ্চমী থেকে লক্ষ্মীপুজো পর্যন্ত এ বারে জেলায় মদ বিক্রি হয়েছে ১৯ কোটি ৪ লক্ষ ৬ হাজার ৪৭৫ টাকার। গত বছরে এই পর্বে জেলায় মোট মদ বিক্রি হয়েছিল ১৬ কোটি ৯১ লক্ষ ১৪ হাজার টাকার। অর্থাৎ, গত বছরের তুলনায় কম-বেশি ৮২ লক্ষ টাকার বেশি মদ বিক্রি হয়েছে।
জেলা আবগারি দফতরের সাম্প্রতিক সময়ের তথ্যে দেখা যাচ্ছে জেলায় মদের চাহিদা উত্তরোত্তর বাড়ছে। পুজোর মরসুমে ২০২১ সালে দেশি মদের বিক্রির পরিমাণ ছিল ৪ লক্ষ ৫৩ হাজার ৯১৭ লিটার। ২০২২ সালে তা বেড়ে হয় ৭ লক্ষ ৮ হাজার ৮৫ লিটার। আর চলতি বছরের পুজোয় দেশি মদ বিকিয়েছে ৬ লক্ষ ৩ হাজার ৩৪০ লিটার। দেশি মদের বিক্রির পরিমাণ কিছু কমলেও বড় লাফ দেখা গিয়েছে বিদেশি মদের বিক্রিতে। ২০২১ সালে পুজোর মরসুমে বিদেশি মদ বিকিয়েছিল ৮২ হাজার ৩৬.৬৯ লিটার। ২০২২ সালে তা ছিল ৮৯ হাজার ৭৩ লিটার। সেখানে চলতি বছরে পুজোয় বিদেশি মদ বিক্রি হয়েছে ১ লক্ষ ৮ হাজার ৮৮৮ লিটার। লাফিয়ে বেড়েছে বিয়ারের বিক্রিও। ২০২১ সালে বিয়ার বিক্রির পরিমাণ ছিল ৩২ হাজার ২৬৮ লিটার। গত বছরে তা তিন গুণ বেড়ে হয় ১ লক্ষ ১ হাজার ২৬৭.৬ লিটার। আর এ বারে পুজোয় বিয়ার বিক্রি ছাড়িয়েছে ১ লক্ষ ৩২ হাজার লিটার।
দফতর সূত্রে জানা যায়, জেলায় পুজোর মরসুমে ২১১টি দোকান থেকে বিকিয়েছে প্রায় ১৯ কোটিরও বেশি টাকার মদ। যদিও এ বারে পুজোয় কোনও ‘ড্রাই-ডে’ অর্থাৎ কোনও দিন মদের দোকানের ঝাঁপ বা পানশালা বন্ধ ছিল না। কোনও দোকান বা পানশালা বন্ধ রাখতে চাইলে তা দফতরের অনুমতি নিয়ে বন্ধ রাখতে পারে, তা ব্যবসায়ীদের জানানো হয়েছিল।
অন্য দিকে, পুজোর অনেক আগে থেকে এ বারে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে অবৈধ মদ ও চোলাইয়ের ঠেকে অভিযান শুরু করেছিল আবগারি দফতর। জেলা আবগারি দফতরের আধিকারিক অসিত শর্মা বলেন, “জেলা জুড়ে অবৈধ ঠেক বা হাটে হাটে বেশ কিছু দিন ধরে আমাদের অভিযান চলছে। রাজস্বও বেড়েছে।” পুজোর সময়েও অবৈধ মদ ও চোলাইয়ের ঠেকে নিয়মিত হানা দেওয়া হয়েছে, জানান তিনি।
দফতর সূত্রে আরও জানা যায়, পুজোর পঞ্চমী থেকে লক্ষ্মীপুজো পর্যন্ত অবৈধ মদের ঠেক-সহ ১৫৫টি জায়গায় অভিযান চালানোর পাশাপাশি ৭৮টি মামলাও রুজু হয়েছে। আট হাজার লিটারের বেশি চোলাই তৈরির তরল উপকরণ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এই পর্বে গ্রেফতারও হয়েছে তিন জন।