Union Budget 2024

জেলার ঐতিহ্য মোদীর মুখে, তবু বাজেটে ব্রাত্যই

ভোটের প্রচারে বিজেপি নেতৃত্ব আশা জাগালেও বাজেটে তার প্রতিফলন ঘটল না। এতে হতাশ দু’জেলার পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৪ ০৭:৫৮
Share:

বিষ্ণুপুরের কুটির শিল্পের ছবিতে সাজছে শহরের দেওয়াল। ছবি: শুভ্র মিত্র।

Advertisement

জল, জঙ্গল ও পাহাড়কে কেন্দ্র করে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার পর্যটনের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু এ বার বাজেটে সামগ্রিক ভাবে দেশে পর্যটন শিল্পের বিকাশের কথা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানালেও পশ্চিমবঙ্গের নাম উচ্চারণ করেননি। ভোটের প্রচারে বিজেপি নেতৃত্ব আশা জাগালেও বাজেটে তার প্রতিফলন ঘটল না। এতে হতাশ দু’জেলার পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা।

এ বার পুরুলিয়ায় লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অযোধ্যা পাহাড়, সেখানকার সীতাকুণ্ড, প্রভু রামের পা এখানে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছিলেন।

Advertisement

সেই প্রসঙ্গের উল্লেখ করে পুরুলিয়া হোটেল-লজ সংগঠনের মুখপাত্র মোহিত লাটা বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের প্রচারে এসে অযোধ্যা পাহাড়ের কথা উল্লেখ করায় এ বার বাজেটে আমরা সদর্থক কিছু ঘোষণার প্রত্যাশা করেছিলাম। শুধু অযোধ্যা পাহাড় ও বাঘমুণ্ডিতেই হোটেল-লজ ও হোম-স্টের সংখ্যা শতাধিক। অথচ বাজেটে জেলার পর্যটন নিয়ে কোনও কথা শোনা গেল না।’’

প্রথম দফায় সাংসদ হয়ে অযোধ্যা পাহাড়ের সঙ্গে রাম-সীতার প্রসঙ্গ টেনে পর্যটন শিল্পের প্রসারে কেন্দ্রীয় সহায়তা চেয়ে কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। যদিও কেন্দ্রীয় সহায়তা মেলেনি বলেই বিরোধীদের দাবি। এ দিন পুরুলিয়ার দ্বিতীয়বারের সাংসদ জ্যোতির্ময় বলেন, ‘‘উন্নয়নের বিষয়টি কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ প্রচেষ্টার উপরই নির্ভর করে। কেন্দ্রীয় সরকার চাইলেও অনেক সময়ই রাজ্য সরকারের সাড়া মেলে না। আমি পর্যটন মন্ত্রীকে চিঠি লিখি। কেন্দ্র রাজ্যের কাছে চিঠি দেয়। কিন্তু রাজ্যের তরফে সাড়া মেলেনি।’’ এ দিনের বাজেট প্রসঙ্গে সাংসদের দাবি, বাজেটে ঘোষণা নেই মানেই জেলা বঞ্চিত, এমনটা ভাবার কারণ নেই। আমি পরবর্তীকালে সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব।’’

পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার কটাক্ষ, ‘‘বিজেপির সিংহভাগই লোক দেখানো। রাজ্যে পালাবদলের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুরুলিয়ার পর্যটনকে অন্য জায়গায় পৌঁছে দিয়েছেন। প্রতি বছর জেলায় পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে। পর্যটনের প্রসার ঘটছে। এসব কি কেন্দ্রের নজরে পড়ে?’’

মন্দিরনগরী বিষ্ণুপুরে দেশ-বিদেশের পর্যটকেরা আসেন। তবে এখানকার রাস্তাঘাট-সহ পরিকাঠামোগত নানা অসুবিধা নিয়ে প্রায়ই প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। বিষ্ণুপুর লজ ও হোটেল মালিক কল্যাণ সমিতির সম্পাদক অসিত চন্দ্র বলেন, “বিহার, ওড়িশার মন্দির-সৌধের পাশাপাশি বিষ্ণুপুরের মন্দিরের কথাও বাজেটে উঠে এলে খুশি হতাম।’’ মুকুটমণিপুর হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি সুদীপ সাহুর দাবি, ‘‘দেড় দশক আগে বাঁকুড়া-মুকুটমণিপুর রেল পথ নির্মাণের শিলান্যাস হলেও সেই কাজ শুরু হয়নি। বাজেটেও এ নিয়ে কিছুই শোনা গেল না। আমরা হতাশ।’’ তিনি জানান, এখানে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে নানা উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে। কেন্দ্র একটু উদ্যোগী হলে আরও ব্যবসা বৃদ্ধির সুযোগ বাড়ত।

মুকুটমণিপুরে হস্তশিল্প ব্যবসায়ী পতিতপাবন সাহুর মতে, ‘‘জলাধারে মনোরঞ্জনের কত ব্যবস্থা হবে বলে শুনে আসছি। কিন্তু হচ্ছে না। এখনও অনেক কিছুই করা বাকি।

তবে বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের আশ্বাস, “এই বাজেটে পর্যটন ক্ষেত্রকে সামনে রেখে নতুন অনেক পদক্ষেপ করা হচ্ছে। বিষ্ণুপুর যাতে বিশেষ সুযোগ পায় সেই দাবি আমি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকে জানাতে চলেছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement