লড়াকু: সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন বালিকা হাঁসদা। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
বছরের পর বছর কেটেছে। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত মেলেনি সরকারি সাহায্য। অন্যের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেই কোনও রকমে দিন চলছে শান্তিনিকেতনের রূপপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কালিপুকুরডাঙার বাসিন্দা বছর পঁয়তাল্লিশের বালিকা হাঁসদার। বৃহস্পতিবার, বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবসও কাটল আর পাঁচটা দিনের মতোই।
এক ভাই ও মা-বাবাকে থাকতেন বালিকা। অপুষ্টির কারণে মাত্র ছয় বছর বয়সে চলার শক্তি চলে গিয়েছিল। ছোট থেকেই তাদের অভাবের সংসার। বাবা দিনমজুরের কাজ করে কোনও রকমে সংসার চালাতেন। বেশ কয়েক বছর আগে বাবা-মা দুজনেই মারা যান। বাড়ির কোনও কাজ করতে না পারায় ভাইও তাঁকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন বলে ওই মহিলার অভিযোগ।
সেই থেকে জীবনের এক নতুন লড়াই শুরু হয় বালিকার। কখনও ফুটপাত, কখনও রেলস্টেশনে দিন কেটেছে। পেটের দায়ে ভিক্ষেও করতে হয়েছে। বেশ কয়েক বছর ভিক্ষে করেই চলছিল। কিছুদিন ধরে ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ শুরু করেন তিনি। নিজে কোনও রকমে প্রান্তিকের রেল স্টেশনের পাশে একটি ছোট্ট চালাঘর তৈরি করছেন। সেখানেই থাকেন। প্রথমে দু’টি বাড়িতে কাজ করতেন। শরীর সায় না দেওয়া এখন একটি ঘরে কাজ করে যেটুকু রোজগার হয় তাতেই তার সংসার চলে।
প্রতি বছরই প্রতিবন্ধী দিবসে সরকারি নানা কর্মসূচি চোখে পড়ে। কিন্তু প্রায় ৯০ শতাংশ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত আবাস যোজনার বাড়ি থেকে শুরু করে সরকারি সুযোগ-সুবিধা কিছুই পাননি বালিকাদেবী। তাঁর কথায়, “কোনও রকমে জীবন চলছে। এখনও পর্যন্ত সরকারের কাছ থেকে কোনওসুবিধা মেলেনি। জানিনা এ ভাবে কতদিন চলবে।” বোলপুর-শ্রীনিকেতনের বিডিও শেখর সাঁইয়ের আশ্বাস, “যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পঞ্চায়েতের মাধ্যমে উনি যাতে সরকারি সুযোগ-সুবিধা পান তার ব্যবস্থা করা হবে।’’