ভাগ: এ এন ঝা স্কুলের সামনে পুরনো পার্টি অফিস।
তৃণমূল নেত্রী সম্প্রতি বিভিন্ন জেলায় দলীয় কোন্দল রুখতে কড়া হওয়ার বার্তা দিয়েছেন। কিন্তু নির্দেশই সার। বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে এসেই চলেছে। সেই তালিকায় নতুন সংযোজন, বান্দোয়ানে তৃণমূলের ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে ক্ষোভে একাংশের নেতা কর্মীদের পাল্টা কমিটি গঠন। ওই নেতা কর্মীদের দাবি, সেটি ব্লক কমিটি হিসেবে কাজ করবে। তবে ওই কমিটিকে আদৌ দল অনুমোদন করে না বলে দাবি করেছেন বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীব সোরেন।
বান্দোয়ান-পুরুলিয়া রাস্তায় এ এন ঝা স্কুলের সামনে তৃণমূলের ব্লক কমিটির কার্যালয়। দলের সমস্ত স্তরের নেতা, কর্মী এমনকী বিধায়কের নিয়মিত যাতায়াত সেখানে। সম্প্রতি বান্দোয়ান–মানবাজার রাস্তায় তৃণমূলের আরও একটি অফিস খোলা হয়েছে। দলনেত্রীর ছবি এবং দলের পতাকা টাঙানো সেখানে। লেখা রয়েছে—তৃণমূলের ব্লক কমিটির কার্যালয়।
তৃণমূলের বান্দোয়ান ব্লক কমিটির সভাপতি রঘুনাথ মাঝির বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা স্বজনপোষণ ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দলেরই নেতা কর্মীদের একাংশ নিজেরাই নতুন ওই কমিটি গঠন করে অফিস খুলে বসেছেন। সেই কমিটির সভাপতি বলে দাবি করা হয়েছে বান্দোয়ানের শিরিষগোড়া গ্রামের বাসিন্দা আদিবাসী নেতা কলেন্দ্রনাথ মান্ডিকে। কলেন্দ্রনাথবাবুর অভিযোগ, রঘুনাথ মাঝি বান্দোয়ানে দল চালাতে একেবারেই ব্যর্থ। আবাস যোজনা, রাস্তা নির্মাণ-সহ বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘দুর্নীতির ব্যাপারে আমরা কয়েকবার জেলা সভাপতিকে জানিয়েছিলাম। তিনি অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও কার্যক্ষেত্রে আমাদের অভিযোগকে গুরুত্বই দেননি।’’
নতুন বান্দোয়ান-মানবাজার রাস্তার পাশে এই ঘরেই বসছেন বিক্ষুব্ধেরা।—নিজস্ব চিত্র।
কলেন্দ্রনাথবাবুর পাশে দাঁড়িয়েছেন স্বপন দত্ত, বীরেন্দ্রনাথ মাহাতোর মতো দলের জেলা কমিটির সদস্যরা। বীরেন্দ্রনাথবাবুর বলেন, ‘‘বান্দোয়ানে তৃণমূলের পথচলা আমাদেরই হাত ধরে। কিন্তু অন্য দল থেকে আসা লোকজন এখন শীর্ষ পদ পাচ্ছেন। দলে আমাদের কথা গুরুত্বই পায় না।’’ তাঁরও দাবি, রঘুনাথবাবু ও আরও কয়েক জন নেতার স্বেচ্ছাচারিতা এবং দুর্নীতি নিয়ে জেলা সভাপতির কাছে দরবার করেও লাভ হয়নি। স্বপন দত্তর দাবি, নেতাদের এই কার্যকলাপে বীতশ্রদ্ধ হয়ে দলের অনেক কর্মী বিজেপি-র দিকে ঝুঁকছেন। তাই তাঁদের ধরে রাখতে পরিস্থিতির চাপেই তাঁরা পাল্টা ব্লক কমিটি গঠন করতে বাধ্য হয়েছেন।
তৃণমূলের বান্দোয়ান ব্লক কমিটির সভাপতি রঘুনাথ মাঝি অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ মানেননি। তাঁর পাল্টা দাবি, দলের কয়েক জন নেতা তাঁর কাছে অনৈতিক ভাবে সুবিধা আদায় করতে চেয়েও পাননি। তাই তাঁরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীব সোরেন ব্লক সভাপতি রঘুনাথ মাঝির পাশে রয়েছেন। রাজীববাবুর অভিযোগ, নতুন কমিটি কথা যাঁরা বলছেন, তাঁরা দল বিরোধী কাজ করে চলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে আলাদা ভাবে অফিস খুলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছিলেন ওঁরা। এমনকী সমর্থকদের অন্য দলে ভোট দেওয়ানোর চেষ্টা করেছিলেন। দল বিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে জেলা সভাপতির কাছে ওঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাব।’’
দলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘দু পক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্বন্দ্ব মেটানোর চেষ্টা করছি।