স্থায়ী সম্পদ গড়ার লক্ষ্যে প্রকল্পের সূচনা জেলায়

জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু জানিয়েছেন, সম্পদ সপ্তাহ পালনের মাধ্যমে জেলার ১৬৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় হাজার প্রকল্পের কাজে এক সঙ্গে হাত পড়বে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

সিউড়ি, বোলপুর শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:০৪
Share:

প্রকল্পের শিলান্যাস করছেন অনুব্রত মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র

প্রতিটি পঞ্চায়েতে এলাকায় স্কুলের সীমানা প্রাচীর, গ্রামীণ হাট, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, শ্মশান, পোলট্রি শেড গড়ে তোলার মতো স্থায়ী সম্পদ তৈরিতে হাত পড়তে চলছে এক সঙ্গে। শুক্রবার এই কর্মকাণ্ডের আনুষ্ঠানিক সূচনা হল বোলপুরে। সম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে ৯৪ কোটি টাকা ব্যয় হবে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।

Advertisement

জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু জানিয়েছেন, সম্পদ সপ্তাহ পালনের মাধ্যমে জেলার ১৬৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় হাজার প্রকল্পের কাজে এক সঙ্গে হাত পড়বে। ওই এলাকার জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনিক আধিকারিকেরা মিলিত ভাবে প্রকল্পগুলির উদ্বোধন করবেন। কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেটা নজরদারির দায় তাঁদেরই।

এ দিন বোলপুর মহকুমাশাসকের অফিসের সভাকক্ষে হাজারেরও বেশি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন ডব্লিউবিএসআরডিএ-র চেয়ারম্যান অনুব্রত মণ্ডল। উপস্থিত ছিলেন মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, জেলাশাসক, জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি নন্দেশ্বর মণ্ডল, জেলা পরিষদের মেন্টর অভিজিৎ সিংহ, মহকুমাশাসক (বোলপুর) অভ্র অধিকারী-সহ অনেকে।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে খবর, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে প্রাপ্য টাকার ৬০ শতাংশ মেলে মজুরি (মাটি কাটা, পুকুর কাটা, গাছ লাগানো ইত্যাদির জন্য) বাবদ এবং বাকি ৪০ শতাংশ মেলে নির্মাণ সামগ্রী বা মেটিরিয়াল কেনার জন্য। কিন্তু, বিগত বছরগুলিতে প্রতিটি পঞ্চায়তে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে কর্মদিবস তৈরি হলেও নির্মাণ সামগ্রী বাবদ প্রাপ্য টাকা সঠিক ভাবে খরচ করে স্থায়ী সম্পদ তৈরির সুযোগ সেভাবে নিতে পারেনি। এ বার সেই সুযোগটাই নিতে চায় জেলা প্রশাসন। এমজিএনআরইজিএ-র নোডাল অফিসার শুভঙ্কর ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘এ পর্যন্ত জেলা জুড়ে ওই প্রকল্পে যে পরিমাণ এবং যত টাকার কাজ হয়েছে, তার ৪০ শতাংশ ধরে পাওনা হয়েছে ৯৪ কোটি টাকা। সেই টাকা যাতে পরিকল্পনা মাফিক স্থায়ী সম্পদ তৈরিতে ব্যয় হয়, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যে পঞ্চায়েত যত বেশি কর্মদিবস তৈরিতে সক্ষম হয়েছিল বা যত বেশি টাকা খরচ করতে পেরেছিল, সেই পঞ্চায়েতগুলির মেটিরিয়াল বাবদ প্রাপ্য টাকাও বেশি। কিন্তু প্রাপ্য যাই হোক, প্রতিটি পঞ্চায়েতকেই কমপক্ষে তিনটি করে প্রকল্প জমা দিতে বলা হয়েছিল। সেই নির্দেশ অনুয়ায়ী ১৬৭টি পঞ্চায়েত থেকেই নানাবিধ প্রকল্প জমা পড়েছে। আগে কেবল কংক্রিটের রাস্তা তৈরিতেই এই খাতে টাকার কিছু অংশ খরচ হত।

এ বার জেলা প্রশাসনই বিভিন্ন প্রকল্পের উল্লেখ করে দিয়েছে।

তাতে এলাকার মানুষের চাহিদা অনুযায়ী স্থায়ী সম্পদ তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে পঞ্চায়েতগুলি। সেই সমস্ত কাজই শুরু হতে যাচ্ছে এক সঙ্গে। এতে কোথাও একটা সুস্থ প্রতিযোগিতাও রয়েছে।

জেলাশাসক বলছেন, ‘‘এতগুলি প্রকল্প এক সঙ্গে শুরু হলে সেখানে যে-সব শ্রমিক কাজ করবেন, তাঁরাও শ্রম বাবদ মজুরি পাবেন। সঙ্গে এলাকার মানুষের দাবিও পূরণ হবে।’’ তিনি এ দিন জানান, ১৬০০টি প্রকল্পের মাধ্যমে কাজগুলি করা হবে। এর মধ্যে এ দিন বেশ কিছু প্রকল্পের শিলান্যাস হয়েছে। এ ছাড়াও জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে এ দিন একটি হোয়্যাটস অ্যাপ নম্বর চালু করা হয়। এই নম্বরে জেলার যে কোনও গ্রামীণ বা পুর-এলাকায় আবর্জনা, নালা-নর্দমা পরিষ্কার, পুকুর পরিষ্কার, নলকূপ সারাই ইত্যাদি পরিষেবা সংক্রান্ত অভিযোগ জানাতে পারবেন সাধারণ মানুষ। এই ধরনের অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দেন জেলাশাসক।

অনুব্রত মণ্ডলের কথায়, ‘‘এ রকম একটি কাজ করে জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসন পশ্চিমবাংলায় ইতিহাস তৈরি করল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement