ফাইল চিত্র।
মানুষটাকে দেখামাত্রই সমস্ত ভয় যেন এক মুহূর্তে চলে গেল! তখন ক্লাস ফাইভে পড়ি। সাইনথিয়া ২ নম্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস ফোরে পড়াকালীন ‘দিদিভাই’ পত্রিকা আয়োজিত গোপীকাবিলাস মেধাবৃত্তি পরীক্ষা প্রথম স্থান অধিকার করি। ১৯৯২-এর ২৮ ডিসেম্বর কোটাসুরে দিদিভাই আশ্রমে পুরষ্কার নিতে আমাকেই প্রথমে মঞ্চে ডাকা হয়েছিল। আর সেই সূত্রেই আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ মুহূর্তের মুখোমুখি হলাম। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের হাত থেকে মেধাবৃত্তির পুরস্কার হিসেবে স্বর্ণপদক প্রাপ্তি আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার।
আজও সব পরিষ্কার ভাবে মনে আছে, প্রণাম করার পরে আমার মাথায় হাত রেখে বলেছিলেন,‘ভালো করে মন দিয়ে পড়াশোনা করো। জীবনে যাই করো, তা নিজের সবটুকু দিয়ে করবে।’ ওই অনুষ্ঠানেই তৎকালীন শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে আমাকে কিছু বলতে বলা হয়েছিল। বলার শেষে আরও একবার আমাকে কাছে ডেকে প্রণববাবু বলেছিলেন, ‘‘খুব ভাল বলেছো। সব সময় বলার অভ্যেস রেখো।’’ কী সুন্দর বাচনভঙ্গি! একবারও বুঝতে দেননি তাঁর পদের কথা। যেন কত দিনের পরিচিত গুরুজন। জীবনের পথে যত এগিয়েছি, তত যেন তাঁর সেই দিনের উপস্থিতি, কথা জীবনের গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আজ তাঁর মৃত্যুসংবাদ পেয়ে মনটা বড্ড ভারী হয়ে উঠছে। বারবার সেই দিনের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। সেদিনের সমস্ত ছবি আর স্মৃতি এখনও অমূল্য সম্পদ।
আশ্রমপল্লি, সাঁইথিয়া