—প্রতীকী ছবি।
ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরু করল বিজেপি। সম্প্রতি কলকাতায় দলের রাজ্য কমিটির বর্ধিত কর্মসমিতির বৈঠকের পরে শনিবার পুরুলিয়া জেলা বিজেপির বর্ধিত কার্যকারিণী বৈঠক থেকে সেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। পুরুলিয়া ২ ব্লকের হুটমুড়া কমিউনিটি হলে ওই বৈঠকে পুরুলিয়া লোকসভার আওতাধীন ৩৬টি মণ্ডলের সভাপতি ছাড়াও ৩৮১ জন শক্তিকেন্দ্র প্রমুখ যোগ দেন। ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় কর্মসমিতির প্রাক্তন সদস্য বিপি সিংহদেও, রাঢ়বঙ্গ জ়োনের যুগ্ম-আহ্বায়ক দেবতনু ভট্টাচার্য, রাজ্য কমিটির সদস্য বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী, জেলা সভাপতি বিবেক রঙ্গা-সহ তিন বিধায়ক নরহরি মাহাতো, কমলাকান্ত হাঁসদা ও বাণেশ্বর মাহাতোও। জেলা সভাপতি বিবেক বলেন, “পুরুলিয়া আসনে এ বারও জয় এসেছে। তবে কর্মীদের বলা হয়েছে, ছাব্বিশই আমাদের লক্ষ্য। পুরুলিয়ায় জয় এলেও বা রাজ্যে আসন কমলেও আত্মতুষ্টি বা হতাশর জায়গা নেই।”
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জেলায় সে ভাবে দাগ কাটতে না পারলেও, নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে আন্দোলনের পথ ধরেই ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটে জেলায় নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেয় বিজেপি। তৎকালীন জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগরের দাবি, সে বারের পঞ্চায়েত ভোটে জেলার একাধিক পঞ্চায়েত সমিতি ও পঞ্চায়েতে দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল। কোথাও কোথাও বিরোধীদের সঙ্গে নিয়ে যৌথ ভাবে বোর্ড গড়ার দাবিদারও ছিল। তবে শাসকদল প্রশাসনকে ব্যবহার করে জনগণের রায়কে মান্যতা দিতে দেয়নি। ঘুরপথে তো কোথাও ভয় দেখিয়ে বোর্ড দখল করেছিল। তাঁর কথায়, “সেই পরিস্থিতিতে মানুষের সঙ্গে থেকে আমরা আন্দোলনের পথই বেছে নিয়েছিলাম।”
গত লোকসভায় বিজেপি ৪৯ শতাংশের কিছু বেশি ভোট পেলেও গত বিধানসভা ভোটে তা নেমে আসে ৪১.৩৪ শতাংশে। এ বারের লোকসভা ভোটেও ৪১ শতাংশ ভোট মিলেছে। জেলা বিজেপির এক শীর্ষ নেতার কথায়, “গত বিধানসভায় আমরা যে ভোট পেয়েছিলাম, মোটামুটি সেই ভোট ধরে রাখা গিয়েছে। অল্প কিছু বাদে প্রায় সমস্ত বুথে আমাদের সঙ্গেই তৃণমূলের লড়াই হয়েছে। যে সব বুথে আমরা পিছিয়েছি, সেখানকার শক্তিকেন্দ্র প্রমুখকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। দেখা হবে, কেন আমরা পিছিয়ে পড়লাম। নিচুতলা থেকেই তার কারণ খোঁজা হবে।”
জেলা সভাপতি বলেন, “ছাব্বিশের নির্বাচনে কোন কৌশলে আমরা এগোব, তার প্রাথমিক রূপরেখা ঠিক হয়েছে। এ ছাড়া, বিজেপি বাংলাকে বঞ্চিত করছে, তৃণমূলের এই ধারাবাহিক প্রচারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন খাতে কেন্দ্রের পাঠানো অর্থ তৃণমূল যে নয়ছয় করছে, তার পাল্টা প্রচার মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে।” তিনি আরও জানান, এ বারের পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটে নতুন প্রজন্মের কিছু কর্মী দলে এসেছেন। তাঁদের রাজনৈতিক ভাবে প্রশিক্ষিত করা হবে। বিদ্যাসাগর বলেন, “তৃণমূল নেতৃত্ব যতই বলুন যে বিত্তবান নয়, বিবেকবান মানুষ চাই, জেলার গ্রাম থেকে শহরের মানুষ চোখের সামনেই দেখছেন, প্রকৃত সত্যিটা কী! ছাব্বিশের লক্ষ্যে আন্দোলনই যে একমাত্র পথ, তা নেতৃত্বকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে।”