বিষ্ণুপুর পুরসভার অস্থায়ী কর্মীরা বিক্ষোভ-মিছিল করলেন। তার জেরে সাফাই ব্যাহত হয় বলে অভিযোগ। চকবাজারে আবর্জনার স্তূপ। নিজস্ব চিত্র
কয়েকশো অস্থায়ী কর্মী কাজ বন্ধ করে বকেয়া মাইনের দাবিতে বিক্ষোভ দেখালেন বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর পুরসভা চত্বরে। শামিল হয়েছিলেন অবসরপ্রাপ্ত পেনশন প্রাপকেরাও। শুক্রবারের ঘটনা। বেশ কিছু দাবি নিয়ে পুরসভা থেকে মিছিল করে তাঁরা মহকুমাশাসকের দফতরে গিয়ে স্মারকলিপিও দেন।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অজয় ডোম, শঙ্কর বাউড়ি, পদ্মা মাদ্রাজি বলেন, “আমরা প্রতিদিন ১৫০ টাকা হারে বেতন পাই। তিন মাস শেষ হয়ে এখন চার মাস চলছে, বেতন পাচ্ছি না। দোকানদার আর ধার দেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। রেশনের চাল ফুটিয়ে কোনও রকমে পেট ভরাতে হচ্ছে।” বিদ্যুৎ দফতরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী শঙ্করচন্দ্র পাল বলেন, “দু’মাস পেনশন পাইনি। সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে। চিকিৎসার খরচও জোগাড় করতে পারছি না।” বকেয়া তিন মাসের মাইনে না পাওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন অস্থায়ী কর্মীরা।
বিষ্ণুপুরের পুরপ্রশাসক তথা তৃণমূলের বিদায়ী পুরপ্রধান শ্যাম মুখোপাধ্যায় জানান, পুরসভায় স্থায়ী কর্মী রয়েছেন ৫৪ জন। অস্থায়ী কর্মীর সংখ্যা প্রায় দেড়শো। তিনি বলেন, ‘‘অস্থায়ী কর্মীদের বেতনের টাকা সরকারের থেকে পাই না। পুরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে দিতে হয়। তাঁদের প্রতি আমিও সহানুভূতিশীল। আগেও দু’-তিন মাস অন্তর মাইনে দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতেও তেমনটা হতে পারে। তেমন হলে তাঁরা কাজ ছেড়ে দিতে পারেন।” শ্যামবাবু জানান, অবসরপ্রাপ্তদের পেনশন এবং স্থায়ী কর্মীদের মাইনে আগামী বুধবারের মধ্যেই হয়ে যাবে।
বকেয়া বেতন দেওয়া, ন্যূনতম মাসিক বেতন ১২ হাজার টাকা করা, স্থায়ীকরণ, কাজের ‘রেজিস্টার’ চালু করা, কর্মীদের ভয় দেখিয়ে কাজ থেকে সরিয়ে না দেওয়ার মতো কিছু দাবিতে বিক্ষোভকারীরা এ দিন মহকুমা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) অনুপকুমার দত্ত বলেন, “পুরসভার অস্থায়ী কর্মীরা বকেয়া বেতনের দাবি নিয়ে এসেছিলেন। পুরপ্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মীদের ডেকে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হবে। তবে কাজ বন্ধ না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে অস্থায়ী কর্মীদের। বিষয়টি জেলা স্তরেও জানানো হয়েছে।”
বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি হরকালী প্রতিহার বলেন, “করোনা-পরিস্থিতিতে মৃত্যুকে ভয় না পেয়ে যাঁরা কাজ করে চলেছেন, তাঁদের বেতন প্রায় চার মাস বন্ধ রয়েছে। আমরা তাঁদের প্রতিবাদকে সম্মান জানাচ্ছি।”