ফাইল চিত্র।
মন্দির খোলায় আশায় ছিলেন তারাপীঠের ব্যবসায়ীরা। তবে কৌশিকী অমাবস্যায় মন্দির বন্ধ থাকার ঘোষণায় ফের ক্ষতির মুখে তারাপীঠের ব্যবসা। লজ মালিক সমিতি অবশ্য করোনা ঠেকাতে প্রশাসনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। মন্দির কমিটির সম্পাদক ধ্রুব চট্টোপাধ্যায়, মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় জানান, এ বছর ৬ এবং ৭ সেপ্টেম্বর কৌশিকী অমাবস্যার দিন মন্দিরে নিত্য পুজোর সঙ্গে অমাবস্যার পুজো, উপাচার হবে। কিন্তু ভিড় সামাল দিতে দর্শনার্থীদের জন্য মন্দির ৩ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর বন্ধ থাকবে।
শ্রাবণ মাস শুরুর আগে তারাপীঠ মন্দির দর্শনার্থীদের জন্য খুলতেই ভিড় বাড়তে শুরু করেছিল। লোকাল ট্রেন চালু না হলেও শিয়ালদহ, হাওড়া থেকে রামপুরহাট পর্যন্ত বিভিন্ন এক্সপ্রেস ট্রেন চালু হওয়ার জন্য কলকাতা থেকেও পর্যটকদের আনাগোনাও বৃদ্ধি হয়েছিল তারাপীঠে। এর ফলে কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়িয়েছিল তারাপীঠের পর্যটন শিল্প। লজ ব্যবসায়ী থেকে তারাপীঠের ছোট বড় মাঝারি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা কৌশিকী অমাবস্যা ঘিরে লাভের মুখ দেখার আশায় ছিলেন। অনেকে ভেবেছিলেন গত বার বন্ধ থাকলেও এ বার কৌশিকী অমাবস্যায় তারাপীঠ মন্দির দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে। কিন্তু ভিড় এড়াতে এবং সংক্রমণ ঠেকাতে ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তারাপীঠ মন্দির বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ।
মঙ্গলবার রামপুরহাট মহকুমা শাসকের সভাকক্ষে জেলা পুলিশ সুপার, জেলাশাসক, জেলা পরিষদের সভাধিপতি, জেলা পরিষদের মেন্টর-সহ তারাপীঠ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান, মন্দির কমিটি, লজ মালিক সমিতি এবং প্রশাসনের অন্য আধিকারিকদের উপস্থিতিতে কৌশিকী অমাবস্যায় মন্দির দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তারাপীঠ লজ মালিক সমিতির সম্পাদক সুনীল গিরি বলেন, ‘‘ব্যবসা মার খেলেও করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কায় মানুষের জীবনের সুরক্ষায় প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে আমরা সহমত।’’
তারাপীঠ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক শিবসাধন দাস জানান, তারাপীঠ মন্দির দর্শনার্থীদের জন্য খুলে রাখার উপরে তারাপীঠের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ব্যবসা নির্ভরশীল। তিনি জানান, মন্দির দর্শনার্থীদের জন্য খোলা না থাকলে স্বাভাবিকভাবেই তারাপীঠে পর্যটকেরা আসবেন না। করোনার জন্য দীর্ঘদিন তারাপীঠ মন্দির দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ ছিল। এর ফলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আর্থিক দিক থেকে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কৌশিকী অমাবস্যার সময় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ভাল লাভের মুখ দেখেন। কিন্তু গত বছরের মতো এ বারও কৌশিকী অমাবস্যায় মন্দির বন্ধ থাকায় পুজোর আগে ব্যবসায়ীরা ফের আর একবার ক্ষতির সম্মুখীন হলেন।’’
কৌশিকী অমাবস্যায় সারা ভারতবর্ষ থেকে তারাপীঠে লক্ষ লক্ষ লোকের সমাগম ঘটে। জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠী জানান, তারাপীঠে দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ রাখার জন্য মল্লারপুর, চাকপাড়া, আটলা-সহ যে সমস্ত এলাকা দিয়ে তারাপীঠ আসা যায় সেই সমস্ত পথও বন্ধ রাখা হবে। সেই সঙ্গে ঝাড়খণ্ড সীমানায় নজরদারি রাখা হবে। জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, ‘‘মঙ্গলবারের সিদ্ধান্ত কার্যকর করার জন্য সমস্ত ধরনের প্রশাসনিক পদক্ষেপ করা হবে। সকলকেই সতর্ক থাকতে হবে।’’